সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: উত্তরপ্রদেশের স্মৃতি ফিরে এল পূর্ব মেদিনীপুরের বাগনান থানার অন্তর্গত ঘোড়াঘাটা স্টেশনে৷ ছিনতাইয়ের পর মহিলা যাত্রীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দিল এক দুষ্কৃতী৷ গতমাসে ঘটে যাওয়া এমনই এক ঘটনায়, মৃত্যু হয়েছিল দুর্গাপুরের বাসিন্দা বছর আঠেরোর তরুণী মণীষা ডোম ও তাঁর মায়ের৷ আর মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় কোনওক্রমে প্রাণরক্ষা পেলেও, ট্রেন থেকে পড়ে মাথা ফেটেছে সরকারি কর্মী সংযুক্তা পালের৷ অভিযুক্তের খোঁজে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ৷ তবে এই ঘটনায় স্বভাবতই আরও একবার রাতের ট্রেনে মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে৷
[ আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ফিরে মৃত সন্তান প্রসব, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ প্রসূতির ]
রেল পুলিশকে দেওয়া বয়ানে আক্রান্ত যাত্রী সংযুক্তা পাল জানিয়েছেন, তিনি হাওড়ার ইছাপুরের বাসিন্দা। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক পদে কাজ করেন। কাজের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেচেদা থেকে হাওড়াগামী লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় ওঠেন। মহিলার অভিযোগ, ট্রেনটি যখন দেউলটি স্টেশনে ঢোকে, তখন ওই মহিলা কামরায় প্রবেশ করে এক যুবক। এরপর ট্রেন দেউলটি স্টেশন ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হাতের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ওই যুবক। বাধা দেন সংযুক্তাদেবী৷ যুবকের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি শুরু হয় তাঁর। যুবকটি মোবাইল ফোন হাতিয়ে নিয়ে দরজার কাছে চলে আসে। তখনও সংযুক্তাদেবী যুবকটির হাত থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের চেষ্টা করলে, যুবকটি তাঁকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা মারে৷ ট্রেনটি বাগনানা থানার অন্তর্গত ঘোড়াঘাটা স্টেশনে প্রবেশ করার সময় প্ল্যাটফর্মে পড়ে যান সংযুক্তাদেবী৷ প্রাণে বাঁচলেও, চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ায় মাথা ফেটে যায় তাঁর। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঘাত লাগে।
[ আরও পড়ুন: লক্ষ্য উন্নয়ন, ‘গো টু ভিলেজ’ কর্মসূচিকে সফল করতে ময়দানে বিডিওরা ]
জানা গিয়েছে, সংযুক্তাদেবীকে ট্রেন থেকে পড়ে যেতে দেখে ছুটে আসে প্ল্যাটফর্মের যাত্রীরা ও জিআরপি কর্মীরা৷ তাঁকে উদ্ধার করা হয়। সেখানেই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। তাঁর মাথায় কয়েকটি সেলাইও করতে হয়। সংযুক্তাদেবীর বাড়ির লোকদের খবর দেওয়া হয়৷ এরপরই পুরো ঘটনাটি রেল পুলিশকে লিখিত ভাবে জানান সংযুক্তাদেবী৷ অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযুক্ত যুবকের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে রেল পুলিশ। সিসিটিভি দেখে যুবককে শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ তবে এই ঘটনায় রাতের ট্রেনে মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও বড়সড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতমাসে এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দুর্গাপুর শহরের রাঁচি কলোনি৷ সেখানকার বাসিন্দা মণীষা ডোম ও তাঁর মা যখন ট্রেনে করে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁদের উপর চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী৷ উত্তরপ্রদেশের মথুরাপুর রোড ও বৃন্দাবন স্টেশনের মাঝে ছিনতাইয়ের পর ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয় তাঁদের৷ ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনেরই৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.