ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ভিন দেশে আয় করলেও টাকা পাঠাননা স্বামী। আর্থিক অনটনে তিন সন্তানকে নিয়ে বিষ পান করলেন মহিলা। দুই কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। পুত্রসন্তান এবং ওই মহিলার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তাঁরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি। স্বামীর দুর্ব্যবহারের জন্য এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল বলেই দাবি ওই মহিলার বাপের বাড়ির লোকজনের।
বীরভূমের কীর্ণাহারের কালীনগরের বাসিন্দা সেরিনা বিবি। বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় তাঁর। দুই কন্যা এবং পুত্রসন্তানও ছিল দম্পতির। স্বামী কর্মসূত্রে দুবাইয়ে থাকতেন। তাই সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন ওই মহিলা। অভিযোগ, গত ৬ বছর ধরে স্ত্রীকে এক পয়সাও পাঠাননি তিনি। তা নিয়ে সেরিনার সঙ্গে তাঁর স্বামীর প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকত। কথা কাটাকাটি হত। শুক্রবারও একই ঘটনা ঘটে। ফোনে কথা কাটাকাটি হয় সেরিনা ও তাঁর স্বামীর। কিছুক্ষণ পর ওই গৃহবধূর ভাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপরই তিনি জানতে পারেন, সেরিনা তাঁর তিন সন্তানকে নিয়ে বিষ পান করেছেন। মহিলার ভাই তড়িঘড়ি বাড়িতে পৌঁছন।
বাড়ি ঢুকে দিদি এবং ভাগ্নে ভাগ্নিদের অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁদের উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালেই সেরিনার দুই মেয়ে হাসি ও খুশির মৃত্যু হয়। সেরিনা এবং তাঁর ছেলের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি।
সেরিনার ভাইয়ের দাবি, টাকা ধার করে স্বামীকে দুবাইয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন তাঁর দিদি। দুবাইয়ে যাওয়ার পর থেকেই কোনও যোগাযোগ রাখতেন না সেরিনার স্বামী। ওই মহিলা ফোন করলে ধরতেন। তবে টাকাপয়সা নিয়মিত পাঠাতেন না। উপার্জিত টাকা দিয়ে বাড়ি থেকে দূরে নিজের মতো করে জীবন কাটাতেন জামাইবাবু। সে কারণে দিদি ও তাঁর স্বামীর মধ্যে দাম্পত্য অশান্তি লেগেই থাকত। ঠিকমতো সংসার করলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটত না বলেই মত তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.