সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন সুন্দরবনের এক মহিলা মৎস্যজীবী। জানা গিয়েছে, নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কুমিরের মুখে পড়ে যান তিনি। এরপর রীতিমতো কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে এ যাত্রা প্রাণে বাঁচলেন ওই মহিলা। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
পাথরপ্রতিমা থানার ছোট রাক্ষসখালির বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের গৌরী খালুয়া। নদীনালা, খাল-বিলের মাছ, কাঁকড়া ধরে বাজারে বিক্রি করাই তাঁর পেশা। তাই, প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও সকাল দশটা নাগাদ জাল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন গৌরী দেবী। বাড়ির পাশেই জগদ্দল নদীর চড়ে দাঁড়িয়ে জলে জাল ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় হঠাৎই তিনি বুঝতে পারেন তাঁর উরু থেকে রক্ত বেরোচ্ছে৷ মুহূর্তের মধ্যে তিনি বুঝতে পারেন কুমিরের খপ্পরে পড়েছেন৷ সঙ্গে সঙ্গে হাতে গোটানো জাল ছুঁড়ে ফেলে দেন জলে। ততক্ষণে উরু থেকে নেমে গৌরী দেবীর হাঁচুর নিচের অংশে কামড় বসিয়েছে কুমির। এমন অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে মাথা ঠান্ডা রেখেই কুমিরটির সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যান গৌরী দেবী। নদীর ধারে থাকা একটি গাছের শিকড় আঁকড়ে ধরেন তিনি। এরপর আতঙ্কে আর্তনাদ শুরু করেন গৌরী। চিৎকার শুনে আশপাশ থেকে ছুটে আসেন অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। লাঠি দিয়ে কুমিরটিকে আঘাত করতে শুরু করেন তাঁরা। টানা প্রায় আধ ঘণ্টা চলে তাঁদের লড়াই। বেগতিক বুঝে ওই মহিলাকে ছেড়ে নদীতে তলিয়ে যায় কুমিরটি।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় স্থানীয়রা মহিলাকে উদ্ধার করে মাধবনগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন গৌরী দেবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.