সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: একুশের শতকেও মধ্যযুগীয় বর্বরতা। পারিবারিক বিবাদের জেরে এক মহিলার মাথা নেড়া করে দেওয়ার পাশাপাশি খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামী-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দিন দুই আগে সন্ধেয় ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবারের ঢোলাহাটের পাকুড়তলা এলাকায়। এই ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূ আজমিরা বিবি
হাসপাতালে চিকিৎসার পর ছাড়া পেয়ে আপাতত বাপের বাড়িতেই রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৬ বছর আগে সমসেল হকের প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর আজমিরা বিবিকে বিয়ে করে সমসেল। তাঁদের ৪ বছরের এক সন্তানও আছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আজমিরার ওপর স্বামী ও প্রথম পক্ষের ছেলে মিলে অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য সালিশিও হয়েছে কয়েকবার। সালিশি সভায় সমসেল হক সকলকে সাক্ষী রেখে প্রতিশ্রুতি দেন, আর স্ত্রীর উপর অত্যাচার করবে না।
কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আবার আজমিরার ওপর স্বামী অত্যাচার করতে থাকে বলে অভিযোগ। প্রথম পক্ষের ছেলেও তাতে বাবার সঙ্গী হয়। আজমিরাকে লাঠি, রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। একসময় মারের চোটে অচৈতন্য হয়ে পড়েন আজমিরা। এরপর আজমিরার মাথা নেড়া করে দেওয়া হয়। বেশ কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে এলাকার মানুষ তাঁকে উদ্ধার করেন। নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় গদামথুরা হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢোলাহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আজমিরার পরিবার। ওইদিন রাতেই রাতে সমসেল হক শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতকে এদিন কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশ খুনের চেষ্টা, বধূ নির্যাতন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। বাকি অভিযুক্তরা পলাতক।
হাসপাতালে চিকিৎসার পর শনিবার বেলায় সেখান থেকে ছাড়া পান আজমিরা বিবি। স্বামীর অত্যাচারের ভয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েই উঠে এদিন নির্যাতিতা গৃহবধূ বলেন, ‘আমাকে প্রায়শই মারত স্বামী। সঙ্গী হত প্রথম পক্ষের ছেলে ও তাঁদের স্ত্রীরা। কয়েকবার সালিশিও হয়েছে। কিন্তু তারপরও অত্যাচার চলেছে।’ তবে স্ত্রীর উপর অত্যাচারের জেরে এমন একটি ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.