নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ভেঙে পড়ল সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের দেওয়াল। ঘটনাটি কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যায় আতঙ্ক ছড়াল ওই এলাকায়। ভবনটির নিচের বেশ কিছু অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ২ ইঞ্চি থেকে ৭ ইঞ্চি ফাটলের গভীরতা। ভবনটিতে বিমা কোম্পানির দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, সোনার দোকান, ওষুধের দোকান রয়েছে। সন্ধ্যায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সদর মহকুমা শাসক, সিউড়ি পুরপ্রধান, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে যান। যদিও বিমা কোম্পানির পক্ষ থেকে দুপুরেই ভবন ছেড়ে চলে যাওয়ার নোটিশ জারি করা হয়। পুরসভা ও পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে।
সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি পেট্রোল পাম্পের পাশে অবস্থিত এই বাণিজ্যিক ভবনটি। শুক্রবার দুপুরে হঠাৎ স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ভবনটির দেওয়ালে বড় মাপের ফাটল দেখতে পান। তাঁরাই বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানান। ততক্ষণে বাড়ি ফাটলের খবর রটে যায়। বউবাজারের কথা ভেবে আতঙ্ক ছড়ায় সিউড়িতে। ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। ঘটনার খবর পেয়ে সিউড়ি পৌরসভা এবং থানার কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
উল্লেখ্য, জনবহুল এলাকায় চারতলার ওই ভবনে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ছাড়াও রয়েছে এলআইসি জীবন বিমা অফিস, রয়েছে আরও কতকগুলি অফিস এবং একাধিক দোকান। এমন ঘটনায় ইতিমধ্যেই ব্যাংক এবং জীবন বিমা অফিস কর্তৃপক্ষ আপাতকালীন ভাবে সমস্ত পরিষেবা বন্ধ রেখেছেন। গ্রাহকেরা তড়িঘড়ি ছুটে বাইরে চলে আসেন। পুরসভার পক্ষে ইঞ্জিনিয়র সুনীল পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, পুরনো একটি বাড়ির পাঁচিলের ওপরেই এই বহুতলটি গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি ভবনটির পাশ দিয়ে পুরসভার হাই ড্রেন গিয়েছে। তারই জলের তোড়ে দেওয়ালে ফাটল হলেও ভবনটির খুব কিছু ক্ষতি হয়নি। কিন্তু সন্ধ্যায় ফাটল ধরা পাঁচিলটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পরে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, “বিল্ডিংটি এমনভাবে ফাটল ধরেছে, যাতে করে দেওয়াল অনেকটা সরে গিয়েছে। যে কোনও সময় বিল্ডিংটি ধসে পড়ে যেতে পারে অথবা ভেঙে পড়তে পারে।” ওই বিল্ডিং-এর মালিক অরূপ চট্টোপাধ্যায় জানান, “বিল্ডিংয়ের এক দিকের দেওয়াল সরে গিয়েছে। আমি মিস্ত্রিকে বলেছি তারা এসে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করে দেবে।” পৌরসভার তরফ থেকে জানানো হয়, “বিল্ডিংয়ের মেন স্ট্রাকচারের সেরকম কিছু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না, তবে নিচের একটা দেওয়াল সরে গিয়েছে। যেহেতু ঘটনাটা এখনই ঘটেছে তাই ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির আশঙ্কার কথা বলা সম্ভব নয়। তবে নিচের অংশ পুরাতন বলেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। আমি পুরো বিষয়টি পৌরসভার চেয়ারম্যানকে জানাবো তারপর উনি যা পদক্ষেপ নেওয়ার নেবেন।”
ছবি: শান্তনু দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.