চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ভবঘুরে ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের অনাহার ঘুচিয়েছে অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের ফুড ব্যাংক। টানা ৫৫০ দিন ধরে প্রতিদিন একবেলার খাবার তাঁরা তুলে দিয়েছেন শতাধিক নিরন্নের মুখে। কিন্তু সাম্প্রতিক লকডাউন পরিস্থিতি ফুড ব্যাংকের সেই কাজ বাধা পাচ্ছিল। চিন্তিত হয়ে পড়ে দাতা, গ্রহীতা উভয়েই। কিন্তু মহৎ কাজের সামনে কোনও বাধাই তো আর বাধা নয়। এক্ষেত্রেও তাই লকডাউন কোনও প্রতিকূলতা তৈরি করতে পারল না। আসানসোল রেল ডিভিশন ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের সাহায্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই ফের শুরু হল ফুড ব্যাংকের খাবার বিলির কাজ।
করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে লকডাউনের পর থেকে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। যা কিছু ছন্দে বাঁধা ছিল, সব এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। ফুড ব্যাংকের কাজও ব্যতিক্রম নয়। প্রাথমিকভাবে তাঁদের পরিষেবা ধাক্কা খেয়েছিল। ভবঘুরে মানুষজন সমবেতভাবে রেল স্টেশন চত্বরে আসতে পারছিলেন না। ফলে তাঁরা অভুক্তও থাকছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ফুড ব্যাংকের কাজে এগিয়ে এল আসানসোল রেল ডিভিশন ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ।
সংস্থার চেয়ারম্যান বুম্বা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের সদস্যরা সমস্যায় পড়েছিলেন। ভবঘুরেদের খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তাঁদের বসবাস কোথায়, তাও জানতাম না। অথচ টানা ৫০০ দিন তাঁদের খাওয়ানো হয়েছে। এই অবস্থায় খাবার একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়াটা আমাদের ভাবিয়ে তুলছিল। প্রশাসনিক অনুমতি মেলায় আমরা স্টেশন চত্বরে খাবার নিয়ে যেতেই, অনাহারে থাকা মানুষজন ফিরে আসেন। তাঁদের হাত স্যানিটাইজ করে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খাবার তুলে দিয়েছি। এবার থেকে পার্সেল করা খাবার তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নিয়মনীতি মেনেই।”
একইভাবে আসানসোলের পশুপ্রেমী সংগঠন উইংস অ্যান্ড ক্লথের সদস্যরা বছরের অন্যান্য দিনের মতোই কাজ করে চলেছেন। দেখা গেল, লকডাউনের সময় তাঁরা রান্না করা খাবার নিয়ে পথকুকুরদের খাওয়াচ্ছেন। সংস্থার পক্ষে চন্দনা মুখোপাধ্যায় বলেন, “মানুষ এখন গৃহবন্দি। মানুষের ওপর নির্ভরশীল কুকুর ও অন্য পশুদেরও খাবারের সংকট মেটাতে আমরা প্রশাসনিক অনুমতি নিয়েই এই কাজ করছি।” এভাবেই একে অপরের পাশে থেকে এই সংকটের মুহূর্ত পেরিয়ে যেতে চাইছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.