সৌরভ মাজি, বর্ধমান: অভিনব কায়দায় রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোলিয়াম সংস্থার মূল পাইপলাইন থেকে ‘ক্রুড অয়েল’ চুরির পর্দাফাঁস। গ্রেপ্তার একটি রাসায়নিক কারখানার মালিক-সহ দুই। ধৃতরা হল সোমনাথ তিওয়ারি ও সুভাষচন্দ্র যশ। রবিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ।
পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার বেলগ্রাম এলাকায় রয়েছে ‘স্বামী দেবানন্দ কেমিক্যালস’ নামে একটি রাসায়নিক কারখানা। সেই কারখানা থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূর দিয়ে গিয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েলের হলদিয়া-বোলপুর সেকশনের পাইপলাইন। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মূল কার্যালয় থেকে এই পাইপলাইনে তেলের প্রেশার (চাপ) নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়। গত প্রায় দুই মাস ধরে সংস্থা লক্ষ্য করে ওই শাখায় পাইপলাইনে তেলের চাপ কম থাকছে। তাঁরা বুঝতে পারেন পাইপলাইন থেকে কোনওভাবে তেল বেরিয়ে যাচ্ছে। তদন্তে নামে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা। একটি দল বেলগ্রাম এলাকায় তদন্ত করে দেখতে পায় অদূরের একটি কারখানা থেকে পাইপলাইন পর্যন্ত খোঁড়াখুঁড়ির চিহ্ন রয়েছে। সংস্থার তরফে মাটি কাটার মেশিন নিয়ে এসে ওই জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। দেখা যায় কারখানা থেকে ক্রুড অয়েলের পাইপলাইনের ভাল্ভ পর্যন্ত একটা পাইপলাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তেল চুরি হচ্ছে নিশ্চিত হন তেল সংস্থার আধিকারিকরা।
এরপর তেল সংস্থার পরিদর্শক দল গলসি থানার পুলিশকে নিয়ে ওই কারখানায় অভিযান চালায়। সেখানে একটি শেডে পাইপলাইন দিয়ে তেল এনে জমা করা হচ্ছে ধরা পড়ে। সেখানে ৪০ লিটার মাপের ১৫০টি খালি জার পাওয়া যায়। এছাড়া ক্রুড অয়েল ভরতি ৬টি জার পাওয়া যায়। কারখানা মালিক ইন্ডিয়ান অয়েলের তেল চুরি করছে ধরা পড়ে। তেল সংস্থার হলদিয়-বোলপুর সেকশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (মেনলাইন) শম্ভুনাথ দে গলসি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ কারখানার মালিক, বর্ধমান শহরের বোরহাটের বাসিন্দা সোমনাথ তিওয়ারিকে গ্রেপ্তার করেছে। একইসঙ্গে গলসির বেলগ্রামের বাসিন্দা সুভাষচন্দ্র যশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.