নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের তারাপীঠ সফরকে আরও গেরুয়া করতে তুলতে চাইছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব৷ বিজেপি সূত্রে খবর, অমিত শাহের পুজোপাঠ পর্ব মেটার পর জেলার ৭৫ জন কার্যকর্তাকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসবেন নরেন্দ্র মোদির সেনাপতি৷ একই সঙ্গে বীরভূমের শেষ কথা অনুব্রত মণ্ডলের জেলায় অমিত শাহর সফরকে সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রচারে ঝড় তুলতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিজেপির জেলা নেতারা৷ চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার৷ তবে, তৃণমূলের শক্ত মাটিতে পদ্মের অনুব্রত কিছুতেই মানতে নারাজ শাসক শিবির৷ অমিতের সফরে পাল্টা কৌশলও সাজিয়ে ফেলেছে অনুব্রত শিবির৷
আগামী ২৮ জুন তারাপীঠে পুজো দিতে অনুব্রত মণ্ডলের দুর্গে পা রাখবেন অনিত শাহ৷ প্রথমে কালীঘাটে পুজো দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও বীরভূমকেই দলীয় ও রাজনৈতিক ভাবে বেছে নেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব৷ অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে অমিত শাহের সফর ঘিরে গেরুয়া শিবিরে ব্যস্ততা জারি থাকলেও ঘাসফুলের তরফেও শুরু হয়েছে চূড়ান্ত তৎপরতা৷
তৃণমূল সূত্রে খবর, অমিত শাহরের তারাপীঠ মন্দিরে প্রবেশপথ দলীয় পতাকায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট আউট, অনুব্রত মণ্ডলের ছবি দিয়ে মুড়ে ফেলা হবে৷ বীরভূমে ঢুকেই অমিত শাহ বুঝতে পারবেন, তিনি কার দুর্গে পা রেখেছেন৷ মূলত, বিজেপির রাজনৈতিক প্রচারকে ভোঁতা করতেই তৃণমূলের তরফে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে খবর৷
তবে, শাসক শিবিরে এহেন পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতারা বলেন, ‘‘আমরা এমনটাই চাইছিলাম। তৃণমূলকে দেখে মনে হচ্ছে, যাঁর বিয়ে তাঁর হুঁশ নেই, পাড়া-পড়শির ঘুম নাই৷’’ তাই তৃণমূলের এই ফ্লেক্স রাজনীতিকে পাল্লা দিতে রবিবার থেকে আসরে নামছে পদ্ম শিবিরও৷ ৫০০ কাট-আউট নিয়ে আনা হয়েছে৷ অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদি ও দিলীপ ঘোষের ছবি দেওয়া থাকছে তাতে৷ তারাপীঠ থেকে মুনসুবা মোড় পর্যন্ত পাঁচটি বিশাল সুদৃশ্য তোড়ন করা হচ্ছে। এবং যাতে সফরে ও প্রচারে কোনও খামতি না হয় তার জন্য করা হল দশটি উপকমিটি৷
অভ্যর্থনা, হেলিপ্যাড, নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা, পুজো, আবাসন, ভোজন এরকম নাম দিয়ে কমিটি গড়েছে জেলা নেতৃত্ব। তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো শেষে তারাপুরে সঙ্ঘ পরিবারের স্কুলের বৈঠকে যাতে বহিরাগত কেউ ঢুকতে না পারে তার জন্য নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী গড়েছে বিজেপি। যার নেতৃত্বে থাকবেন অতনু চট্টোপাধ্যায়। অতনুবাবু বলেন, ‘‘জনতা যুব মোর্চা থেকে দু’শো জনকে বাছাই করা হয়েছে। যাঁদের বুকে বিশেষ ধরনের ব্যাচ থাকবে। তারাপুরের শিশু মন্দিরের বৈঠকে যাতে বহিরাগতরা কেউ ঢুকতে না পারে সে জন্য আমরা তৎপর থাকব।’’
তিনি জানান, এজন্য দশ জন করে দলভাগ করে সেই দলের একজন করে প্রমুখ করা হয়েছে। যাদের আগের রাতে তারাপীঠে চলে আসতে হবে। জলের দায়িত্বে অর্জুন সাহা। তিনি জানান, দু’হাজার পাউচ প্যাকেট রাখা হচ্ছে সদস্য ও অতিথিদের জন্য। দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘দশটা থেকে একটা পর্যন্ত থাকার আশা করছি আমরা। দশটায় পুজো দিয়ে ভোজনের আগে পর্যন্ত শিশু মন্দিরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হবে। সেজন্য ৭৫ জন জেলার কার্যকর্তাদের ডাকা হয়েছে।’’ বিশ্বভারতীতে জেলা সভাপতির কাছ থেকে বীরভূমের দুটি সংসদ এলাকার প্রতিনিধি দেখতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারই দ্বিতীয় পদক্ষেপে অমিত শাহের এই ব্যক্তিগত পুজো সফর৷ কিন্তু তাঁকেই রাজনৈতিক সফর হিসাবে সামনে রেখে চাঙ্গা হতে চাইছে বীরভূম বিজেপি৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.