ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাকপুর: করোনা ভাইরাসের থাবা এবার বারাকপুরে। খোদ পুর-চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডেই আক্রান্ত হয়ে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খবর প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় ছড়িয়েছে আতঙ্ক। আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার-সহ তাঁর সংস্পর্শে আসা মোট ৮০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে৷ ওই বাড়ির আশেপাশের ১০০ মিটার এলাকায় বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বন্দি বাসিন্দাদের ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
সূত্রের খবর, আক্রান্ত বছর সাতচল্লিশের ওই ব্যক্তি বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী। বারাকপুর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। লকডাউনের জেরে বাস-ট্রেন বন্ধ থাকায় হাসপাতালেরই একটি বাসে করে রোজ কর্মস্থলে যেতেন আক্রান্ত ব্যক্তি। ফিরতেনও ওই গাড়িতে। ওই বাসে তিনি একা নন, আরও কয়েকজন যাতায়াত করতেন রোজ। যার মধ্যে বারাকপুর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডেরই আরেকজন এবং দেবপুকুরের একজন ছিলেন তাঁর সহযাত্রী। আবার অন্যান্য জায়গা থেকেও কয়েকজন উঠতেন।
স্বাস্থ্য পরিষেবায় যুক্ত থাকার কারণে এই লকডাউনের মাঝেও প্রতিদিনই নিয়ম করে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। আচমকা সর্দি-কাশি হওয়ায় গত শনিবার ওই হাসপাতালেই তিনি সোয়াব টেস্ট করান। ওইদিনই তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁর ভিন রাজ্য কিংবা বিদেশ যাওয়ার কোনও সাম্প্রতিক ইতিহাস নেই। তা সত্ত্বেও কীভাবে তিনি করোনা সংক্রমিত হলেন, তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের। তবে কি বেসরকারি ওই হাসপাতাল থেকেই তাঁর শরীরে সংক্রমণ ঘটেছে? এ বিষয়ে বারাকপুরের চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, “আমাদের ধারণা ওই হাসপাতালের কারও সংস্পর্শে গিয়েই সংক্রমিত হয়েছেন ওই ব্যক্তি। সুতরাং অযথা আতঙ্কিত না হয়ে মানুষকে আরও বেশী সচেতন হতে হবে।”
এদিকে এই ব্যক্তি করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর আক্রান্ত ব্যক্তির স্ত্রী, ছেলে, বাড়ির পরিচারিকা ও তাঁর পরিবারের ৫ জনকে বারাসতের কোয়ারেন্টাইন সেণ্টারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে একই বাসে যাতায়াত করা সহযাত্রী এবং হাসপাতালের অন্যান্য সহকর্মী, যাঁরা তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাদের পরিবার মিলিয়ে আরও ৭৫ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ির আশপাশের ১০০ মিটার বাঁশের ব্যারিকেড করে ঘিরে দিয়েছে পুরসভা। বন্ধ সাধু মুখোপাধ্যায় রোড এবং আশপাশের বাগচিপাড়া, চক্রবর্তী পাড়া, জাফরপুরের আংশিক এলাকা। মাইকিং করে এলাকার কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের নাম ও ফোন নম্বর জানানো হয়েছে। তাঁরাই বাড়ি বাড়ি খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দিয়ে আসবেন। এলাকার বাসিন্দাদের খুব প্রয়োজন ছাড়া বেরতে দেওয়া হচ্ছে না। যে কোনও প্রয়োজনে সরাসরি চেয়ারম্যান উত্তম দাসকেও ফোন করে জানাতে পারেন বলে আশ্বাস তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.