ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতীর হাই সিকিউরিটি জোনে ফের চন্দন গাছ চুরির চেষ্টা। একটি নয় পরপর দু’টি গাছ কেটে পাচারের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। রবীন্দ্রভবন চত্বর থেকে গাছটি কেটে, টুকরো টুকরো করে পিছনের পুকুরে ফেলে দেয় তারা। যদিও মালঞ্চ বাড়ি থেকে কাটা গাছটি নিয়েই যেতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। ঘটনার খবর পেয়েই তল্লাশি অভিযানে নামে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা বিভাগ। ঘটনাস্থলে যান বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। গাছের টুকরোগুলিকে উদ্ধার
করা হয়৷ ঘটনায় রবীন্দ্রভবনের পিছনে দায়িত্বে থাকা দু’জন নিরাপত্তাকর্মীকে শোকজ করে কর্তৃপক্ষ। তবে নিরাপত্তাবেষ্টনীতে থাকা বিশ্বভারতীতে ফের চন্দনগাছ চুরির চেষ্টা কী করে হল তা নিয়ে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
[ আরও পড়ুন: যাদবপুরে বাবুলকে নিগ্রহে নাম জড়িয়েছে ছেলের, আতঙ্কে দেবাঞ্জনের পরিবার ]
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিশ্বভারতীর হাই সিকিউরিটি জোন থেকে দু’টি চন্দন গাছ কেটে নেওয়া হয়। প্রথম ঘটনাটি ঘটে রবীন্দ্রভবন চত্বরে। নাট্যঘরের পাশে এবং পাম্প হাউসের পাশে দু’জায়গাতে ফেন্সিংয়ের তার কেটে দুষ্কৃতীরা রবীন্দ্রভবনের পিছন দিক থেকে ভিতরে ঢোকে। গুহাঘরের পাশে পম্পা লেকের ধার থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক চন্দন গাছ গোড়া থেকে কেটে নেওয়া হয়। গাছের যে অংশের বাজার মূল্য রয়েছে তা টুকরো টুকরো করে কেটে বাকি অংশ ঘটনাস্থলে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। প্রসঙ্গত, পম্পা লেকের পাশে এবং রবীন্দ্রভবনের পিছনের অংশে দু’জন বন্দুকধারী বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। এর আগেও প্রায় একই জায়গা থেকে চন্দনগাছ চুরি হয়েছিল। একইভাবে রবীন্দ্রভবনের পিছনে কলাভবনের উলটোদিকে রাস্তার পাশে মালঞ্চ বাড়ি থেকে একটি চন্দন গাছ কাটে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু নিয়ে যেতে পারেনি। দু’টি ক্ষেত্রে যাতে শব্দ না হয় তার জন্য ব্যাটারি চালিত ছোট করাত ব্যবহার করা হয়েছে। মালঞ্চ বাড়িতে সর্বক্ষণের নিরাপত্তারক্ষী না থাকলেও
রাস্তায় প্রায় সারারাত গাড়ি নিয়ে ঘোরে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকর্মীরা। প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ এড়িয়ে কীভাবে গাছ কাটা হল?
[ আরও পড়ুন: শাসকের রাজনৈতিক সৌজন্য, বিক্ষোভরত সিপিএম কর্মীদের গোলাপ উপহার বোরো চেয়ারম্যানের ]
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, রবীন্দ্রভবন এবং মালঞ্চবাড়ি থেকে দু’টি গাছ চুরির চেষ্টা হয়েছে। দু’টি গাছই উদ্ধার হয়েছে। এদিকে গাছ কাটার খবর পেয়ে নিরাপত্তা আধিকারিকদের পাশাপাশি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে চলে আসেন। শুরু হয় তল্লাশি, পরে লালবাঁধের জল থেকে রবীন্দ্রভবন থেকে কেটে নিয়ে যাওয়া চন্দন গাছ উদ্ধার হয়। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যারা এত ঝুঁকি নিয়ে রবীন্দ্রভবন চত্বর থেকে গাছ কাটল তারা পুকুরের
জলে কেন ফেলে দিল? আবার নিরাপত্তারক্ষীরা তা খুঁজেও পেয়ে গেল? অভিযোগ উঠেছে চুরি হয়েছে জানতে পেরে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রথমে পুলিশে খবর না দিয়ে কেন উদ্ধারকাজ শুরু করে দিল?
[ আরও পড়ুন: লোধা সম্প্রদায়ের মন জয়ে পদক্ষেপ, চারটি গ্রামকে ‘আদর্শ’ হিসেবে গড়ে তুলবে প্রশাসন ]
প্রসঙ্গত, ২০০৪-তে রবীন্দ্রভবন থেকে নোবেল চুরির পর থেকে রবীন্দ্রভবন, মালঞ্চ বাড়ি, রতনকুঠি-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে একাধিক চন্দন গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছিল। একইভাবে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিসের অডিট দপ্তরে চুরি হয়েছিল। কিছু গাছ উদ্ধার হলেও কারা বিশ্বভারতীতে ধারাবাহিকভাবে চুরি করছে তাদের ধরতে পারেনি পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.