ছবি: প্রতীকী
শেখর চন্দ্র, আসানসোল: শরীর ভাল নয়, বলেই দাবি করেছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার যাই যাই করেও আসানসোল জেলা হাসপাতালে যাননি। তবে শনিবার সকালে কার্যত বিপরীত দাবি চিকিৎসকের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় দু’সপ্তাহে ৪ কেজি ওজন বেড়েছে অনুব্রতর। এখনই গরু পাচার মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতাকে হাসপাতালে ভরতির কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলেও দাবি চিকিৎসকের।
অনুব্রত মণ্ডলকে শনিবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যাতায়াতের পথে অনুব্রতর চোখ মুখ বেশ থমথমে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেননি তৃণমূল নেতা। এদিন মেডিসিনের চিকিৎসক, সার্জেন-সহ বেশ কয়েকজন তাঁর শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখেন। একাধিক শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, অনুব্রত মণ্ডলের পালস রেট ৮২। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৬ শতাংশ। রক্তচাপ ১০৬/৮০। গত ২০ ফেব্রুয়ারি অনুব্রতর শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। সেই সময় তাঁর ওজন কমে দাঁড়িয়েছিল ৯১ কেজি। তবে শনিবারের স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর জানা গিয়েছে, গরু পাচার মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতার ওজন ৯৫ কেজি। অর্থাৎ প্রায় দু’সপ্তাহে অনুব্রতর চার কেজি ওজন বেড়েছে।
শুক্রবার ভারচুয়াল শুনানিতে অনুব্রত দাবি করেন তাঁর ফিসচুলা ফেটে গিয়েছে। তার ফলে অত্যন্ত কষ্ট পাচ্ছেন। তবে শনিবার চিকিৎসক জানান, ফিসচুলা দিয়ে এখন আর রক্তপাত হচ্ছে না। শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। তাই এই মুহূর্তে আর হাসপাতালে ভরতি করার প্রয়োজনীয়তা নেই। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর ফের আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে ফিরে যান অনুব্রত। আসানসোলে থাকবেন নাকি দিল্লি চলে যেতে হবে তাঁকে, কলকাতা হাই কোর্টে তা নিয়ে চলছে জোর সওয়াল জবাব।
এদিন হাই কোর্টে ইডি’র আইনজীবী জানান, ‘‘কলকাতা এবং দিল্লি দুই হাই কোর্টে তথ্য গোপন করা হয়েছে। দুই জায়গায় মামলা করা হয়েছে এটা কোথাও জানানো হয়নি। এই সব যুক্তি শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে বলা হয়েছিল। আদালত রক্ষাকবচ দেয়নি। জেল হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। অনুব্রত অসুস্থ নন। প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হবে এইমসে। সেখানে সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা পাবেন।’’
পালটা অনুব্রতর আইনজীবী রক্ষাকবচের দাবি জানান। তাঁর যুক্তি, “গত বছরের ২১ ডিসেম্বর জেল কর্তৃপক্ষকে ই-মেল করে ইডি। জানানো হয় এখনই কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। অনুব্রত অসুস্থ। আসানসোলের সিবিআই আদালত পর্যাপ্ত চিকিৎসার কথা জানিয়েছেন। তাই যে কোনও বিশেষজ্ঞকে দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করানো হোক। সেখান থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত স্থগিত রাখা হোক হাজিরার নির্দেশ। ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি হাই কোর্টে শুনানি রয়েছে। ওইদিন পর্যন্ত রক্ষাকবচ দেওয়া হোক।” অনুব্রত মণ্ডলকে ‘নীতিহীন বিচারপ্রার্থী’ বলেও তোপ দাগেন ইডি’র আইনজীবী। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর আপাতত রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.