অরূপ বসাক, মালবাজার: মণিপুরের (Manipur) টুপুলে ভূমিধসে নিহতদের তালিকায় বাংলার বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে রয়েছেন এক জওয়ানও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে শহিদ হয়েছেন উত্তরবঙ্গের মালবাজারের (Malbazar) নাগরাকাটার বাসিন্দা শংকর ছেত্রী। নাগরাকাটার খাস বস্তিতে শহিদ শঙ্করের বাড়িতে এই খবর পৌঁছতেই গোটা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছেলের কফিনবন্দি দেহ ফিরে আসার অপেক্ষায় পরিবার।
ছেত্রী পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মণিপুরের নানে জেলায় রেলের একটি নির্মীয়মাণ প্রকল্প চলাকালীন নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন জওয়ান (Jawan) শংকর ছেত্রী। আচমকা পাহাড় থেকে নেমে আসা বিশাল ধসে তাঁদের সেনা ছাউনির উপর আছড়ে পড়ে। ছাউনিটি ধুলিসাৎ হয়ে যায়। মারাত্মক জখম হন শংকর ছেত্রী। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবারের পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানাচ্ছে পরিবার। এরপর বৃহস্পতিবার বাড়িতে পৌঁছয় দুঃসংবাদ।
শহিদ জওয়ান শংকরের স্ত্রী ও পাঁচ বছরের কন্যা রয়েছে। তিন ভাইয়ের মধ্যে শংকরই ছোট। প্রথম থেকেই স্বপ্ন দেখতেন সেনায় যোগ দিয়ে দেশসেবা করার। সেই দেশের কাজেই বীরের মৃত্যু বরণ করলেন তিনি। আগামী আগস্টে অসুস্থ বাবা ভোজ বাহাদুর ছেত্রীর অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। এদিন কথা বলতে গিয়ে বারবার গলা ধরে আসছিল শংকরের স্ত্রী পুনমের। কোনওরকমে তিনি বলেন, ”মাস চারেক আগে বদলি হয়ে মণিপুরের ডিউটিতে গিয়েছিল। ফোনে বারবার বলত, দুশ্চিন্তা না করতে। বুধবার ওখানে ধসের পর থেকে ওর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ হচ্ছিল না।”
মণিপুরের টুপুলে রেলপ্রকল্পের কাজ চলাকালীন ভূমিধসে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন জওয়ান। নিহত হয়েছেন ৫ জন সাধারণ নাগরিক। এঁদের মধ্যে দার্জিলিংয়েরও (Darjeeling) মোট ৯ বাসিন্দা রয়েছেন বলে শোনা গিয়েছে। তবে এখনও তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি। দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে পরিবারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.