সোমনাথ পাল, বনগাঁ: সন্তানসম্ভবা গৃহবধূর গর্ভাশয়ে বড়সড় টিউমার। ভ্রূণের সঙ্গেই আকারে বাড়ছে সে। অস্ত্রোপচার করতে গেলে যেকোনও মুহূর্তে ভ্রূণের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কেননা গর্ভাশয়ের যে জায়গায় টিউমারটি অবস্থান করছে, তার খুব কাছেই জরায়ুর নালি। অস্ত্রোপচারে সামান্য অঘটন ঘটলেই মা ও ভ্রূণের জন্য বাড়তে পারে বিপদ। এই বিপদ নিয়েই বনগাঁ হাসপাতালে ভরতি হন গাইঘাটার গৃহবধূ রুপালী ঢালি। সফল অস্ত্রোপচারের পর মহালয়ার দিন বাড়ি ফিরে গেলেন ওই সন্তানসম্ভবা গৃহবধূ। গোটা ঘটনায় বনগাঁ হাসপাতালের চিকিৎসকদের হাতযশকেই বাহবা দিচ্ছেন গৃহবধূর পরিবার।
জানা গিয়েছে, গত মাসের ২৪ তারিখে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে বনগাঁ হাসপাতালে ভরতি হন ধরমপুরের কুলঝুটি গ্রামের ওই গৃহবধূ। ইউএসজি করতেই জানা যায় মা হতে চলেছেন রুপালীদেবী। জরায়ুতে কোনওরকম সমস্যা না থাকলেও ইউএসজি-তে টিউমারের সন্ধান মেলে। গর্ভাশয়ে শিকড় ছড়াচ্ছে আস্ত টিউমার। যন্ত্রণার কারণ প্রকাশ্যে আসতেই নতুন সমস্যা শুরু। কোথায় কীভাবে হবে টিউমারের অস্ত্রোপচার। টিউমারের অবস্থান এতটাই জটিল যে বনগাঁ হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো নেই। এদিকে রোগীর অবস্থাও খারাপ, দূরে স্থানান্তর করা সম্ভব নয়। বেশ কিছুদিন টিউমারটিকে পর্যবেক্ষণে রাখলেন চিকিৎসকরা।
বেশ পুরনো টিউমার। জরায়ুর নালির সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে আকারেও বেড়েছে। গৃহবধূর পরিবারের অনুমতি নেওয়ার পর এক মুহূর্তও নষ্ট করেননি বনগাঁ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক মহীতোষ মণ্ডল। ২৪ তারিখেই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। টিউমার বাদ যেতেই দীর্ঘ য্ন্ত্রণার অবসান ঘটে। দিনদুয়েক বিশ্রামের পর চিকিৎসকরা দেখেন গৃহবধূর গর্ভের ভ্রূণ সুস্থ আছে। ভাল আছেন গৃহবধূও। এরপর টানা পর্যবেক্ষণে দেখা যায় গৃহবধূর যাবতীয় অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রয়েছে। মহালয়ার দিন বিকেলে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরলেন গৃহবধূ। এদিকে ক্ষুদ্র পরিকাঠামোয় এই জটিল অস্ত্রোপচারের সফলতায় খুশি বনগাঁ হাসপাতালের চিকিৎসকমহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.