সোমনাথ পাল,বনগাঁ: কথায় বলে রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প। এখানে সবই সম্ভব। রাজনীতিতে যেমন থাকবে হিংসা-হানাহানি, মতাদর্শগত পার্থক্য, আবার তেমনি থাকবে সৌজন্য বোধ, শিষ্টাচার। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একেবারে গোড়া থেকে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিরোধীপক্ষ যখন ছুটে গিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত, এমনকী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন নিয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। ঠিক সেই সময় প্রকৃত রাজনৈতিক সৌজন্যের নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার গোপালনগর দুই নম্বর পঞ্চায়েতের জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা। মুখ্য ভূমিকায় অবশ্য স্থানীয় তৃণমূলে বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস।
সোমবার রাজ্যের অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি গোপালনগর দুই নম্বর পঞ্চায়েতে নতুন বোর্ড গঠন ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়৷ সকাল থেকেই সাজোসাজো রব। কোনও রকম গন্ডগোলের আশঙ্কায় পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের আর এদিন দরকার পড়ল না। একেবারে উৎসবের মেজাজে দুপুরের পরপরই ভোটের ফলাফল অনুযায়ী নিয়মমাফিক পঞ্চায়েতে নতুন বোর্ড গঠন করল শাসক শিবির। সবই নিয়মমাফিক চলল শান্তিপূর্ণ ভাবে। বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শেষেই দেখা গেল অনন্য নজির। বোর্ডগঠনের পর চলছিল বিজয়ী প্রার্থীদের সম্ভবর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান। পঞ্চায়েতের সামনে বোর্ড গঠনের অনুষ্ঠানমঞ্চে হঠাৎই উঠে পড়লেন ওই পঞ্চায়েতের গ্রামসভার বিজেপির দুই বিজয়ী প্রার্থী। দুই প্রার্থীই মহিলা সদস্য। তারাও অবশ্য তৃণমূলের প্রার্থীদের মতো সম্বর্ধিত হলেন। গলায় ঝুলল বিজয়ীর মালা। মিষ্টি মুখ৷ আরও কত কী!
তৃণমূল প্রার্থীদের মতোই দুই বিজেপি সদস্যাও ভাগ করে নিলেন জয়ের আনন্দ। তৃণমূলের এই সৌজন্যে স্বভাবতই বেজায় খুশি হলেন দুই বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য। বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আমরা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মা-মাটি-মানুষের দল তৃণমূলের কর্মী। তৃণমূল আর সৌজন্য একে অন্যের পরিপুরক। এই ঘটনা তারই জ্বলন্ত নিদর্শন।” এদিন গাইঘাটা ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েতের পাঁচটিতে তৃণমূল একটিতে বিজেপি, বাগদা ব্লকে চারটির মধ্যে তিনটি তৃণমূল ও একটি বিজেপি, বনগাঁয় তিনটি পঞ্চায়েতে তৃণমূল ও গোপালনগরের চারটি পঞ্চায়েত তৃণমূল বোর্ড গঠন করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.