গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তি। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: সেনা ছাউনির আশপাশে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিল এক ব্যক্তি। তাকে দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। জিজ্ঞাসাবাদে তার কথায় চমকে ওঠেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তি আদপে এক বাংলাদেশি নাগরিক। শুধু তাই নয়, জেরায় ওই ব্যক্তি দাবি করেছে, সে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রাক্তন কর্মী। পরে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওই ব্যক্তি কি বাংলাদেশি চর? সেই বিষয়ে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
ঘটনাটি শুক্রবার রাতের শিলিগুড়ি সংলগ্ন বাগডোগরার ব্যাংডুবি সেনা ছাউনি সংলগ্ন এলাকার। এর আগে এক আফগান নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। একের পর এক এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে ওই ব্যক্তিকে পাকড়াও করা হয়। ধৃত ব্যক্তির নাম আশরাফুল আলম। সে বাংলাদেশের রংপুরের বাঁদরগঞ্জ থানার বাসিন্দা। ওই বাংলাদেশি নাগরিককে সেনাবাহিনী আটক করে বাগডোগরা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ধৃত ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রাক্তন কর্মী বলে দাবি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে ওই বাংলাদেশি ব্যক্তিকে ব্যাংডুবি সেনা ছাউনির ফিল্ড অ্যামুনিশন ডিপোর আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। অবিন্যস্ত চুল, দাড়ি, পড়নের ময়লা কাপড় দেখে স্থানীয়দের মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই সন্দেহ হয়। পাশের গ্রাম এমএম তরাইয়ে গিয়ে খাবার চাইতে গেলে বিপত্তি ঘটে। ওই ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রাক্তন কর্মী দাবি করে খাবার চায়। ওই কথা শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যক্তিকে বসিয়ে খেতে দেয়। সেই সময়ে সেনাবাহিনীতে খবর দেওয়া হয়। সেনা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে যায়। বাগডোগরা থানায় অভিযোগ দায়ের করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “ধৃতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ধৃত ব্যক্তিকে পুলিশ, কেন্দ্রীয় ও সেনা গোয়েন্দারা দফায় দফায় জেরা করছে। জানা গিয়েছে জেরায় অসংলগ্ন কথা বলছে ওই ব্যক্তি। কখনও জানাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত টপকে চার-পাঁচ মাস আগে ভারতে ঢুকেছে। সীমান্তের মাঝিরা তাঁকে নদী পার করে দেয়। কিন্তু কোন সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকেছে সে? সেই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। এতদিন ওই ব্যক্তি কোথায় ছিল, তাও জানাতে পারেনি সে। পায়ে হেঁটে ব্যাংডুবিতে পৌঁছেছে বলে জানায় আশরাফুল। ঘুরেফিরে দাবি করে, সে ময়নামতির গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করত। বাড়িতে পাঁচ সন্তান আছে, স্ত্রী নেই। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.