ছবি: প্রতিবেদক
টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: স্বপ্ন দেখেছিলেন বাড়ির নিচে রয়েছে গুপ্তধন। একটুও সময় নষ্ট না করে সে গুপ্তধনের সন্ধানও শুরু করে দেন। চোখে স্বপ্ন ছিল, গুপ্তধন হাতে পেলেই পালটে যাবে ভাগ্য। সংসার সুখের হবে। কিন্তু হল ঠিক উলটোটা। বাড়িতে বিরাট গর্ত করার দায়ে পুলিশের হাতকড়া পড়তে হল গৃহকর্তাকে।
ঘটনা বাঁকুড়ার কতুলপুরের দুধবাড়ি গ্রামের। এই গ্রামেই বাস কৃষক দম্পতির। দিন পনেরো আগে একটি স্বপ্ন দেখেন গৃহকর্তা রোহিত নন্দী। তাঁর বাড়ির নিচে নাকি রয়েছে গুপ্তধন। গল্প-কাহিনিতে স্বপ্ন অনেক সময়ই অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। এক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই মনে হয়েছিল রোহিত নন্দীর। তবে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য কামারপুকুরের এক তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হন তিনি। জানান নিজের অমূল্য স্বপ্নের কথা। তান্ত্রিকও এক্কেবারে ষোলোআনা নিশ্চিত হয়ে বলে দেন, রোহিত নন্দীর স্বপ্ন সত্যি হবেই। বাড়ির ৪০ ফুট নিচেই রয়েছে গুপ্তধন। তান্ত্রিকের কথায় আরও আশ্বস্ত হন গৃহকর্তা। তারপরই কুয়ো কাটার শ্রমিকদের ডেকে বাড়ির পাশের মাটি খুঁড়তে শুরু করেন। বেশ গোপনেই কাজ চালাচ্ছিলেন। বাড়ি ঢেকে দিয়েছিলেন ত্রিপলে। এমন গোপন খবর তো পাঁচকান করা যায় না! কিন্তু দেওয়ালেরও তো কান আছে। তাই এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি দিন সময় লাগেনি।
ঘটনাটি প্রথম চোখে পড়ে সুজিত নন্দী নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার। বসত বাড়িতে ছ’ফুট বাই ছ’ফুটের গর্ত দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। কৌতূহলের বসে রোহিত নন্দীর বাড়িতে ঢুকে পড়েন তিনি। সব কাণ্ডকারখানা দেখে জানতে চান, ব্যাপারটা কী? রোহিত নন্দী প্রথমে বলেন, মাটির তলায় কঙ্কাল রয়েছে। আবার একবার বলেন গোপন জিনিস আছে। এভাবে ক্রমাগত বয়ান বদলাতে থাকায় সন্দেহ হয় সুজিতবাবুর। তিনিই পুলিশে খবর দেন। এরপরই ঘটনাটি জানতে রোহিতকে আটক করে পুলিশ। কুয়ো কাটার শ্রমিক মাধবকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি এমন মোড় নেবে, ভাবতেই পারেননি কৃষক দম্পতি। তাই আপাতত তাঁদের গুপ্তধনের স্বপ্ন বিশ বাঁও জলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.