Advertisement
Advertisement
Bear

কালান্দরের হাত থেকে মুক্তি, ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানায় সঙ্গিনী পেল বাঁকুড়ার ভল্লুক

ওই ভল্লুকটি নিয়ে বাঁকুড়ায় খেলা দেখাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয় বিহারের বাসিন্দা কালান্দর।

Bankura's bear released in Jhargram zoological park
Published by: Sayani Sen
  • Posted:February 23, 2025 9:10 pm
  • Updated:February 23, 2025 9:10 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: নাকের ছিদ্রে শক্ত করে বাঁধা দড়ি। মুখ ঘুরিয়ে হাঁটাচলা করলেই বোঝা যায় ওই রশি কতটা কষ্ট দিচ্ছে। কিন্তু অবলা বণ্যপ্রাণের যন্ত্রণা বুঝবে কে? তবে বংশপরম্পরায় বেশ কয়েক বছর ধরে পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ওই ভল্লুককে নিয়ে খেলা দেখিয়ে যাচ্ছে মহম্মদ রাজ কালান্দর। যা বন্যপ্রাণ সুরক্ষা সংশোধন আইন, ২০২২-র বিধি বহির্ভূত। আর সেই ধারা লঙ্ঘনের জন্যই ওই কালান্দার বন দপ্তরের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন শ্রীঘরে। আর এদিকে ওই ভল্লুকের ঠিকানা হল ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক। রবিবার সন্ধ্যার মুখে ঝাড়গ্রামের ওই চিড়িয়াখানায় ওই পুরুষ ভল্লুক পা রেখেই পেয়ে যায় এক নতুন সঙ্গিনীকে।

অন্যদিকে, সঙ্গীর জন্য দীর্ঘদিন মনমরা হয়ে থাকা ঝাড়গ্রামের স্ত্রী ভল্লুকও সঙ্গ পেল। আর এই সঙ্গ পাইয়ে দিতেই রাজ্য বনবিভাগ ও ওয়েস্ট বেঙ্গল জু অথরিটির নির্দেশে গত শনিবার বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগের সারেঙ্গা বনাঞ্চলের দুবরাজপুর বিটের পিঠাবাকরা মৌজা থেকে উদ্ধার হওয়া ওই পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ভল্লুককে ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়। ওই চিড়িয়াখানার দায়িত্বে থাকা তথা ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “দক্ষিণ বাঁকুড়া থেকে উদ্ধার হওয়া ওই ভল্লুককে আমরা পেয়েছি। এখন তার সুস্বাস্থ্যের দিকেই আমাদের নজর। তবে ওই পুরুষ ও স্ত্রী ভল্লুক একে অপরের সঙ্গী পেল।”

Advertisement
Bear
ভল্লুক নিয়ে খেলা দেখাচ্ছে কালান্দর। নিজস্ব চিত্র

বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত কালান্দরের বাড়ি বিহারের বাঁকা জেলার বাউন্সি থানার ডালিয়া গ্রামে। শনিবার গ্রেফতারের পর রবিবার তাকে খাতড়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়। বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগের এডিএফও অসিত দাস বলেন, “ধৃতের কাছ থেকে আমরা জানার চেষ্টা করবো ওই পরিবারটি কতদিন ধরে উদ্ধার হওয়া পুরুষ ভল্লুককে নিয়ে খেলা দেখিয়ে যাচ্ছিল। নির্দেশ মোতাবেক ওই ভল্লুককে ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে।” সমগ্র রাজ্যের মধ্যে শুধুমাত্র পুরুলিয়াতেই ভল্লুক পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে। ওই কেন্দ্রে ‘বিকাশ’ ও ‘বালো’ নামে দুটি ভল্লুক আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই ঝাড়্গ্রামের চিড়িয়াখানায় মনমরা হয়ে আছে সেখানে থাকা স্ত্রী ভল্লুক। তাই তাকে সঙ্গী পাইয়ে দিতেই উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ভল্লুক পুনর্বাসন কেন্দ্রে না পাঠিয়ে তড়িঘড়ি ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানায় পাঠানো হল।

আপাতত তিন সপ্তাহের বেশি ওই ভল্লুককে কোয়ারেন্টাইনে রাখবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তারপর সফট রিলিজের পর তার স্বাস্থ্যের কথা বিচার করে তবেই তাকে এনক্লোজারে আনা হবে। এখন ঝাড়গ্রামের এই নতুন অতিথি নিয়ে ব্যস্ততার শেষ নেই চিড়িয়াখানার কর্মীদের। তার প্রোটিন রিচ ডায়েট চার্ট থেকে ২৪ ঘন্টা নজরদারি শুরু হয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হলেই দীর্ঘদিন ধরে তার নাকের ছিদ্রে বাঁধা ওই রশিও খুলে দেবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সঙ্গীকে পেয়ে তখন এনক্লোজারে মুক্ত হয়ে যাবে সে। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ওই পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ভল্লুক দীর্ঘদিন কালান্দরের কাছে থাকায় তার যৌন ক্ষমতাকে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে কিনা তা দেখা হবে। তবে পরিস্থিতি যাই হোক দুই ভল্লুককে সঙ্গ পাইয়ে দেওয়াতেই যেন আনন্দ রাজ্য বনবিভাগ থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল জু অথরিটির।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement