ছবি: প্রতীকী।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এক চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল বর্ধমান (Burdwan) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার বর্ধমানের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দ্রকানন এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে সুমিত খটিক নামে ওই চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। তাঁর বয়স ৩৯ বছর। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ওই চিকিৎসক আত্মঘাতী (Suicide) হয়েছেন। তবে কী কারণে এই ঘটনা তা এদিন রাত পর্যন্ত স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। পারিবারিক কোনও কারণে ওই চিকিৎসক আত্মঘাতী হয়েছেন না কি ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এদিন রাত পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
সুমিত খটিক নামে ওই চিকিৎসক বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে RMO হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, “খুবই দুঃখজনক একটা ঘটনা। সুমিতের মতো এত ভাল প্রোগ্রেসিভ ডাক্তারের এভাবে চলে যাওয়া খুব আশ্চর্যের। পুলিশ তদন্ত করছে। কী হয়েছে তারাই তদন্ত করে দেখুক।” খুব কম বয়সেই বর্ধমানে চিকিৎসক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। পাড়াতেও জনপ্রিয় ছিলেন। ইন্দ্রকানন উন্নয়ন কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ডাঃ খটিক। জনপ্রিয় চিকিৎসক তথা এলাকার একজন ভাল মানুষের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ এলাকা। ইন্দ্রকানন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, ভালো চিকিৎসকের পাশাপাশি উনি খুব ভাল মনের মানুষ ছিলেন। এলাকার যে কোনও সমস্যায় খবর পেলেই উনি ব্যস্ততার মধ্যেও সঙ্গে থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকের বাবা ও ঠাকুমা কলকাতার রাজারহাটে (Rajarhat) থাকেন। বর্ধমানের বাড়িতে স্ত্রী সঙ্গীতা, ১০ বছরের মেয়ে, শ্বশুর, শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন সুমিতবাবু। এদিন ওই চিকিৎসকের স্ত্রী তাঁর বাবাকে নিয়ে বাইরে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ওই চিকিৎসক, তাঁর মেয়ে ও শাশুড়ি ছিলেন। বাড়িতে উপরতলার একটি ঘরে চিকিৎসক ছিলেন। দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করেন তাঁর শাশুড়ি। কিন্তু কোনও সাড়া পাননি। তাঁর পায়ে ব্যথা থাকায় সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠতে পারেন না। বিষয়টি তিনি পড়শিদের জানান।
খবর শুনে একজন এসে উপরে গিয়ে দেখেন ঘরের ভিতরে সিলিং ফ্যান (Ceiling fan) থেকে দেহটি ঝুলছিল গমছার ফাঁসে। খালি গায়ে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরেছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে এদিন সকালেও না কি চিকিৎসকের অশান্তি হয়েছিল। তার জেরে এই ঘটনা না কি এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে থা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন তদন্তকারীরা। তাতেই স্পষ্ট হবে মৃত্যুর সঠিক কারণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.