চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: লকডাউনে খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেজ নেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও প্রকাশ্যে নিতে পারছেন না মধ্যবিত্তরা। সেই সমস্ত পরিবারকে চিহ্নিত করে রাতের অন্ধকারে বা ভোর রাতে চাল, ডাল, আলু পৌঁছে দিচ্ছেন নববিকাশ ক্লাবের সদস্যরা। করোনার আবহে আগামী দুর্গাপুজোর থিমপুজো ক্যানসেল করে সেই বাজেট নিয়ে ত্রাণের কাজে পুরোপুরি ঝাঁপিয়ে পড়েছে বার্নপুরের এই ক্লাব। শহরের প্রথম ক্লাব যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৬০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই পথ অনুসরণ করেই বাকিরাও এগিয়ে আসেন।
বুধবার কুলটির মিঠানি গ্রামে দেখা যায় ক্লাবের সদস্যদের। ২১ মার্চ থেকে আটকে পড়েছেন মেলার বিক্রেতারা। লকডাউনের কারণে চব্বিশ প্রহরের মেলা হয়নি। পরবর্তী গাজনের মেলাও সব জায়গায় বন্ধ। মাঠের মাঝে তাঁবু খাটিয়ে তাঁরা রয়েছেন। খাদ্য সংকটের খবর পেয়েই ক্লাব সম্পাদক বাপ্পা তালুকদার ও রূপক সরকাররা ত্রাণ নিয়ে এসে পড়েন সেখানে। মেদিনীপুর থেকে আসা পাঁশকুড়ার চপ বা বাঁকুড়া থেকে খেলনা বিক্রেতাদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। আশ্বাস দেওয়া হয় সাতদিন পর আবার আসবেন।
বন্যপ্রাণ ও বন্যসভ্যতা বাঁচানোর বার্তা দিয়ে তাক লাগানো থিমের পুজো করেছিল এবার বার্নপুর নববিকাশ ক্লাব। জুটেছিল প্রচুর পুরস্কার। তারপরেও করোনার আবহ ও লকডাউনে থিম পুজোর ভাবনা থেকে সরে সেই অর্থ বাজেট খরচ হচ্ছে ত্রাণের কাজে। সেই মতো শহরজুড়ে দুস্থ ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল বার্নপুরের এই ক্লাবকে। যেখানেই ডাক পাচ্ছেন চাল, ডাল, আলু, আটা, তেল, খাদ্যসামগ্রী নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের আদিবাসী খেলোয়ারদের তাঁরা সাহায্যেক জন্য এগিয়ে এসেছেন। বরথল নামক গ্রামে দত্তক নিয়ে লাগাতারা ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকী রাস্তার কুকুরদেরও রান্না করে প্রতিদিন খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। রূপক সরকার বলেন শুধু ত্রাণ নয় লকডাউনে ঘরমুখী বাঙালির শিল্পসংস্কৃতিকে জাগিয়ে তুলতে সোশাল মিডিয়া অনুগল্পের প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়েছিল। সেই প্রতিযোগিতার ফলাফলও ঘোষণা হয়েছে সম্প্রতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.