রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: টিউশন সেরে বাড়ি ফিরতে রাত হয়েছিল। একারণে বাড়ির দুই স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে বড়রা একটু বকাবকি করেন। এই অভিমানেই ভোররাতে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল দুই বোন। গোঙানির শব্দে ঘরে গিয়ে পরিবারের লোকজন দেখতে পান, দুই বোনের অবস্থাই শোচনীয়। তড়িঘড়ি তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে একজনের মৃত্যু হয়। দ্বিতীয়জন এখন আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মঙ্গলবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা-১ নম্বর ব্লকের জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের বহলিয়া গ্রামে।
মৃত কিশোরীর নাম সোমা দণ্ডপাট (১৬)। সে দশম শ্রেণির ছাত্রী। চিকিৎসাধীন ছাত্রীর নাম সুজাতা প্রামাণিক (১৫)। সোমা ও সুজাতা মাসতুতো পিসতুতো বোন। দু’জনেই এক জায়গায় টিউশন পড়ে। পিসতুতো বোন সুজাতা বেশিরভাগ সময় সোমার বাড়িতে থেকে যায়। কেননা টিউশনের স্যরের বাড়ি থেকে সোমার বাড়িটিই কাছে। সোমবার রাতেও দুই বোনে পড়তে গিয়েছিল। ফেরার সময় কিছুটা দেরি হয়ে যায়। এদিকে রাত বাড়তেই বাড়ির লোকজনের চিন্তা শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুক্ষণ পরে তারা বাড়ি ফিরলে অভিভাবকরা সামান্য বকাবকি করেন। রাতে দু’জনেই মুখ খোলেনি। মঙ্গলবার ভোররাতে দুই বোনের ঘর থেকে গোঙানির শব্দ পেয়ে কে ঘুম থেকে উঠতে না দেখে বাড়ির লোকজন ছুটে যান। গিয়ে দেখেন কীটনাশক খেয়ে দু’জনেই প্রায় অচেতন। তড়িঘড়ি তাদের এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের আইসিইউতে ভরতি করা হলে সকালেই সোমার মৃত্যু হয়। এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বোন সুজাতা।
দেরি করে ফেরায় সামান্য বকাবকির ফল যে এমন ভয়াবহ হতে পারে ভাবতে পারেননি অভিভাবকরা। দুই পরিবারের লোকজনই হাসপাতালে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবুও মৃতের পরিবারের সদস্যদের কারও কারও দাবি, এই আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে। নাহলে পড়া নিয়ে তাদের বকুনি দেওয়া নতুন কোনও বিষয় নয়। সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা সোমার। এই সময় পড়তে গিয়ে রাতে দেরি করে ফিরলে বাড়ির লোকের চিন্তা তো হবেই। তারউপরে দিনকাল ভাল নয়। তাই সামান্য বকুনিতেই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার ঘটনা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছেন এগরা থানার পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.