মহম্মদ সৈয়দ আলম মণ্ডলকে মিষ্টি খাইয়ে সংবর্ধনা দিচ্ছেন ইটিন্ডা আমিনিয়া মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সম্পাদক সরিফুল মণ্ডল-সহ শিক্ষকরা।
গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম পরীক্ষায় প্রথম ও দ্বিতীয়-সহ প্রথম দশে বসিরহাটের সীমান্তবর্তী এলাকার মোট তিন কৃতি। আজ শনিবার রাজ্য মাদ্রাসা এডুকেশন বোর্ডের আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলপ্রকাশে দেখা গিয়েছে বসিরহাট এলাকায় কৃতিরা রয়েছে। এই আলিম পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম স্থান করেছে মহম্মদ সৈয়দ আলম মণ্ডল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৯০০-এর মধ্যে ৮৭৩। কাটিয়া শাহ রজব আলি সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে সৈয়দ আলম আলিম পরীক্ষা দিয়েছিল।
সৈয়দ আলম আবাসিক হিসেবে ইটিন্ডা আমিনিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ১নং ব্লকের ইটিন্ডা-পানিতর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ইটিন্ডা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা আব্দুল কায়ুম মণ্ডল পেশায় সেলাই মিস্ত্রি। কর্মসূত্রে তিনি মুম্বইতে থাকেন। মা সাবিনা বিবি সাধারণ গৃহবধূ। টালির চালের ঘরের বাসিন্দা সৈয়দ আলম ছোট থেকেই যথেষ্ট মেধাবি। সৈয়দ আলম জানিয়েছে, পড়াশোনা করতে আর্থিকভাবে তাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। আর্থিক সমস্যার জন্য পরিবারের তরফে সঠিক সময়ে টাকাও আসত না। গৃহশিক্ষকদের মাইনেও প্রতি মাসের সঠিক সময়ে দেওয়া সম্ভব হত না।
আগামী দিনে জয়েন্ট পরীক্ষা দিয়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়র হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার। পড়াশোনার জন্য সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছে সে। এদিন ফল বেরতেই স্কুলের সকলের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, ডিরেক্টর মাসিদুর রহমান, পরিচালন সমিতির সম্পাদক সরিফুল মণ্ডল ও বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক ডাঃ সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়রা সৈয়দ আলমকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা জানান। সরিফুল মণ্ডল বলেন, “আমরা চাই সীমান্তবর্তী এই গ্রাম থেকে আগামী দিনে আরও ছাত্রছাত্রী ভালো পড়াশোনা করে গ্রাম তথা দেশের নাম উজ্জ্বল করুক। আমরা সবরকমভাবে তাদের পাশে থাকব।”
আলিম পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী বসিরহাটের স্বরূপনগর ব্লকের বিথারী-হাকিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মাসুম বিল্লা গাজি। বাবা জিয়াউর গাজি পেশায় কৃষক। ভারত – বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বিথারী গ্রামের বাসিন্দা তারা। মাসুম বিল্লা গাজি কাটিয়া শাহ রজব আলি সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্র। এবার আলিম পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৮৭০। আগামী দিনে ডব্লিউবিসিএস আধিকারিক হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। শামিমা সুলতানা আলিম ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে, তার প্রাপ্ত নম্বর ৮৩৭। স্বরূপনগর ব্লকেরই বাঁকড়া-গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালদহ মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা সে। স্বরূপনগর ওশিয়াহ সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্রী। তার বাবা নবিউল্লা মল্লিক পেশায় পাথরের মিস্ত্রি। আগামী দিনে পড়াশোনা করে আইনজীবী হতে চায় সে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.