শুভঙ্কর বসু: এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কোনও ভূমিকা নেই। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নির্দেশে ভোটে তাঁদের কাজে লাগানো যাবে না। ফলে পুলিশকর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। হিসেব বলছে, সিভিক ভলান্টিয়াররা কাজ না করলে রাজ্যের এবারের ভোটে লক্ষাধিক কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) প্রয়োজন হবে। কারণ, বুথের সংখ্যা বেড়েছে অনেকটাই। সেই বাড়তি বুথের দায়িত্বে মোতায়েন করতেই হবে বাড়তি আধাসেনাকে। কীভাবে তা হবে, এ নিয়ে চলতি সপ্তাহেই বৈঠকে বসছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। দিল্লির আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন রাজ্যে নির্বাচনী অফিসাররা। ধাপে ধাপে রাজ্যে আধা সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে বলে খবর। তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে বৈঠকে।
করোনা পরিস্থিতিতে এবারে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তাই বুথের সংখ্যা বেড়েছে ২২ হাজারেরও বেশি। সেক্ষেত্রে ভোটারদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলার বহু কাজে পুলিশকর্মীদের সাহায্য করবে কারা, সে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে কমিশনের নয়া নির্দেশের পর। বলা হয়েছে, কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার বা গ্রিন পুলিশ নয়, ভোটে কাজ করবে শুধু রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রের আধাসেনা বাহিনী। রাজ্য পুলিশের অন্দরের হিসেব বলেছে, খুব বেশি হলে তাঁদের ৭০ শতাংশ ভোটের কাজ করতে পারবেন। কারণ, তার বাইরে নির্বাচনী আবহে রাজ্য পুলিশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকবে।
পুলিশের সূত্রের হিসেবে, গত ভোটে সারা রাজ্যজুড়ে ৭৮ হাজার ৯০৩টি বুথ ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার খাতিরে ২২ হাজার ৮৮৭টি বুথ বাড়ানো হয়েছে। এখন রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৯০টি। গত ভোট পর্যন্ত স্পর্শকাতর নয়, এমন বুথের দায়িত্বে রাজ্য পুলিশও থাকত। যদিও স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর বুথের দায়িত্বে থাকত কেন্দ্রীয় বাহিনী। এক পুলিশকর্তা জানান, রাজ্যের প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে ভোটের সময় কাজে লাগানো হলে গড়ে প্রতি বুথে বড়জোর একজন থাকতে পারেন।
হিসেব বলছে, কলকাতা পুলিশে আছেন ৩৬ হাজার পুলিশকর্মী ও আধিকারিক। রাজ্য পুলিশে মোট পুলিশকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। এছাড়াও পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার জন্য রয়েছেন ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭৬০ জন সিভিক পুলিশ, তিন হাজার ভিলেজ পুলিশ, পাঁচ হাজার এনভিএফ, ৩০ হাজার হোমগার্ড। সেই ক্ষেত্রে শুধু পুলিশকর্মীরা থাকলে বুথপিছু কতজন থাকবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশকর্মীরাই। একেকটি বুথে গড়ে তিন জন নিরাপত্তারক্ষীর প্রয়োজন। এই হিসেব অনুযায়ী, যে অতিরিক্ত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও আধিকারিককে ভোটের কাজে প্রয়োজন, তার সংখ্যা লক্ষাধিক। ভোটের আগে থেকেই জওয়ানদের ধাপে ধাপে রাজ্যে পাঠানো হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.