শুভময় মণ্ডল: কেউ হারিয়েছেন মাথার ছাদ। আবার কারও বাড়ি ডুবে গিয়েছে জলের তলায়। আমফান ক্ষত এখনও উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় স্পষ্ট। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের দিকে আবারও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম। খাদ্যসামগ্রী বিতরণ আগেও করেছেন এই সংগঠনের সদস্যরা। এবার আমফানের ধাক্কায় বেসামাল অসহায় দুই পরিবারকে গৃহ নির্মাণে সাহায্য করে ওই সংগঠন। এছাড়াও পাঁচশোর বেশি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিল ফোরাম।
বসিরহাট মহকুমার বাসিন্দা নার্গিস বিবি। স্বামী তাঁকে ছেড়ে বাংলাদেশ চলে গিয়েছেন। কোনও যোগাযোগ রাখেন না। অনেক আগেই হারিয়েছেন বাবা-মাকেও। বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন বোনকে নিয়ে একটি ছোট্ট ঘরে জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান (Amphan) এসে মাথা গেঁজার আশ্রয় কেড়ে নিয়েছে। ওই অসহায় মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছে বেঙ্গল মাদ্রাস এডুকেশন ফোরাম। বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে তাঁকে। নার্গিস বিবির মতোই অসহায় অবস্থা হাসানাবাদ ব্লকের জয়গ্রামের বাসিন্দা জলিল গাজির। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে তাঁর বর্তমান আশ্রয়স্থল এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঝড়ে তাঁর ঘর উড়ে গিয়েছে। এই পরিবারেরও পাশে দাঁড়ায় ওই সংগঠনের সদস্যরা। সাহায্য পেয়ে যেন কিছুটা হলেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচল দুই পরিবার।
এছাড়াও বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় আটটি শিবির করে খাদ্যসামগ্রী, শাড়ি, পোশাক ও মশারি বিতরণ করে মাদ্রাসা শিক্ষকরা। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল আলু, ডাল, সরেষর তেল, চিনি, সোয়াবিন, ওআরএস, চিঁড়ে, মুড়ি, বিস্কুট, গুড়, রুটি, কলা। পাঁচশোর বেশি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। দেড়শোর বেশি মহিলাকে শাড়ি এবং সুলকানী ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া পঞ্চাশটি শিশুকেও পোশাক বিতরণ করা হয়। সেই সঙ্গে ২৫টি পরিবারের হাতে মশারি তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাদুড়িয়া ব্লকের জঙ্গলপুর গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবারকে ত্রিপল তুলে দিয়েছে ফোরাম।
সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ইসরারুল হক মণ্ডল বলেন, “এলাকার বহু মানুষ গৃহহীন। সকলের গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া আমাদের সংগঠনের তরফে সম্ভব নয়। আমরা যতটুকু পেরেছি, তা করেছি। কিন্তু এদের করুণ অবস্থার কথা বিবেচনা করে দ্রুত সরকারিভাবে বাড়ি তৈরির ব্যবস্থা করা হোক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.