শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: কাশ্মীরের কুলগামের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রায় কুড়ি দিন পর অবশেষে মু্র্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাহালনগরের বাড়িতে ফিরলেন গুলিবিদ্ধ জহিরুদ্দিন। শনিবার গভীর রাতে বাড়ি পৌঁছন তিনি। রবিবার সকাল থেকেই তাঁকে দেখতে ভিড় করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন জহিরুদ্দিনের স্ত্রী ও পরিবার।
২৮ অক্টোবর এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন কাশ্মীরের কুলগামে কর্মরত মুর্শিদাবাদের জহিরুদ্দিন। তাঁর চোখের সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গিয়েছিলেন ৫ সহকর্মী রফিক শেখ, কামরুদ্দিন, মুরসালিম শেখ, নইমুদ্দিন শেখ ও রফিকুল শেখের। মৃত্যু অবধারিত বুঝতে পেরে কোনওক্রমে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন মুর্শিদাবাদের জাহিরুদ্দিন। গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনিও। তবে ভাগ্যের জোরে প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। ঘটনার পর দীর্ঘদিন শ্রীনগরের হাসপাতালে চিকিৎসা চলেছে তাঁর। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতেই ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে কাশ্মীর থেকে কলকাতায় পৌঁছন সেই জহিরুদ্দিন। সেদিন রাতেই দমদম বিমানবন্দর থেকে সোজা তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা।
এসএসকেএমে ভরতি করার পর হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, আপাতত তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। তবে কুলগামের ঘটনার পর থেকেই প্রতিমুহূর্ত আতঙ্কে রয়েছেন জহিরুদ্দিন। ওই মুহূর্তের স্মৃতি কার্যত তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁকে। সেই সময়ই জানানো হয়েছিল যে কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রেখে যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফেরানো হবে। সেই মতোই শনিবার গভীররাতে সাগরদিঘির বহালনগরের বাড়িতে ফেরেন জহিরুদ্দিন। পেট ও হাতের গুলি বের করা সম্ভব হলেও এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে তাঁর। সেই সঙ্গে প্রয়োজন বিশ্রামেরও। চিকিৎসকদের নির্দেশে খুব একটা কথা বলাও বারণ তাঁর। কুলগামের সেই ভয়ংকর রাতের পর সন্তানকে সামনে পেয়ে চোখের জল বাঁধ মানছে না জহিরুদ্দিনের বাবা-মায়ের। আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন স্ত্রী পারমিতা। তবে পরিবারের একমাত্র সদস্যের এই অবস্থায় কী হবে সংসারের ভবিষ্যৎ, সেই দুশ্চিন্তায় গোটা পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.