বাবুল হক, মালদহ: বাংলার মাটিতে ঢুকে বিহার (Bihar) পুলিশের উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযোগ ঘিরে ধুন্ধুমার মালদহের (Maldah) হরিশ্চন্দ্রপুর। বিহার সীমান্তবর্তী সাদলিচক গ্রাম-পঞ্চায়েতের সহরাবহরা এলাকায় ঢুকে রাস্তার ধারে কুড়িটি বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অভিযোগ, বিহারের পুলিশের অত্যাচার থেকে রক্ষা পায়নি আবাল-বৃদ্ধবনিতা। আর এই ঘটনা ঘিরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, ”এই বিষয়টি নিয়ে বিএলআরও-দের সেখানে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। সেই রিপোর্ট পেলেই বুঝতে পারব, বিহার পুলিশ যে জায়গায় ঢুকেছিল, তা বাংলার জায়গা কি না। সেই বুঝে পদক্ষেপ করা হয়েছিল।”
হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় রাস্তার ধারের জমি পজিশন ফাঁকা করতেই বিহার পুলিশকে পাঠানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ২০ টি বাড়িতে ভাঙচুর করে জায়গা ফাঁকা করে ফের বিহারে ফিরে যায় পুলিশের দল। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে এলাকার এক তৃণমূল (TMC)নেতা এবং ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ, রাস্তার ধারে সমস্ত জমি তৃণমূল নেতাদের দখলে রয়েছে। কিন্তু সেই জমির সামনে প্রায় ৭০ বছর ধরে এই পরিবারগুলি বসবাস করছিল। তাঁদের সরাতেই এই পরিকল্পনা বলে অভিযোগ।
গোটা ঘটনার অভিযোগ জানানো হয়েছে স্থানীয় কুমেদপুর ফাঁড়ি এবং হরিশ্চন্দ্রপুর থানাতে। গোটা ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছে জেলা বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। পাশাপাশি সুর চড়িয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। সমস্ত ঘটনার তদন্তে নেমেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ। আরে গোটা ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির রাজনৈতিক চাপানউতোর। সাদলিচক গ্রাম-পঞ্চায়েতের প্রধান ইন্দ্রজিৎ সরকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটা বিহার পুলিশের ব্যাপার। তাঁর কিছু করার নেই।
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্বু রহমানের প্রতিক্রিয়া, ”ওই পরিবারগুলি দীর্ঘদিন ধরেই হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাতে বাংলার সীমানাতেই বসবাস করছেন। বিহারের পুলিশ এভাবে এসে আক্রমণ চালাবে, এটা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। ওরা বাংলার জমিতে বসবাস করছে না বিহারের জমিতে বসবাস করছে সেটা দেখার জন্য আইন রয়েছে। বাংলা জেলা পুলিশ প্রশাসনকে না জানিয়ে এই ভাবে অতর্কিতে বাংলার মানুষের ওপর বিহার পুলিশের হামলা আমরা বরদাস্ত করব না।” এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি জানান, গরিব মানুষগুলোর উপর তৃণমূল নেতাদের মদতেই এই আক্রমণ। রাস্তার পিছনের জমি তৃণমূল নেতারা কিনে নিয়েছেন। এখন জমির সামনে থেকে এই কুঁড়ে ঘরগুলি সরিয়ে দিতে হবে। তাই বিভিন্ন অজুহাতে বিহারের পুলিশের কিছু কর্মীকে ভাড়া করে এই কাজ চালিয়েছে এলাকার তৃণমূল নেতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.