ছবি: শান্তনু দাস
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: গাছের আমের নিরাপত্তা চাই। এই দাবি নিয়েই পুলিশের দ্বারস্থ হতে চলেছেন এক চাষি। রাজনগর থানার কানমোড়া গ্রামের মান্নান খান এমনই পরিস্থিতির কথা জানালেন। বাড়িতে কয়েকটি বিদেশি আমের গাছ লাগিয়েছিলেন তিনি। সেটা যে জাপানের মিঞাজাঁকি আম, জেনেছেন দিন পনেরো আগে। বিশেষ করে গত সপ্তাহে এই আম দুবরাজপুরে একটি আম ১০ হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় আরও শঙ্কা জেগেছে মান্নান সাহেবের মনে। যে কারণে দিনে-রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনাও করছেন। কারণ গাছে যে দু’শোরও বেশি আম!
নিজের বাড়ির কাছে পাঁচ একর জমিতে ড্রাগন ফ্রুটের চাষ করেছিলেন মান্নান খান। তখনই কলকাতা থেকে অর্ডার দিয়ে বাংলাদেশের বাজার থেকে দু’ধরনের বিদেশি আমের গাছ লাগিয়েছিলেন। প্রতিটি চারা দু’হাজার টাকা করে নিয়েছিল ওই সংস্থা। তাও বছর চারেক আগে। এবছরই প্রথম ফলন হয়েছে আমের। কারণ ১০টি মিঞাজাঁকি আম গাছের মধ্যে চারটি গাছ বেঁচে আছে। আরেকটি আমেরিকান প্রজাতির গাছও রয়েছে। আমটি আপেলের মতন দেখতে। লাল। টুসটুসে। নজরকাড়া।
কিন্তু সেই আম যে বিরল প্রজাতির অতিমূল্যবান ড্রাগন ফ্রুটের, চাষি জানত না। মান্নান সাহেব জানান, “পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলার আম্বা পঞ্চায়েতে প্রথম এই মিঞাজাঁকি আমের ছবি দেখি। তারপরেই আমার গাছের ছবি তুলে নিয়ে গিয়ে আম্বা গ্রামে গিয়ে আম মিলিয়ে দেখি এ তো আমার গাছের আম। আমার গাছের আম আমি কলকাতায় পাঠাই। তারা জানায় এটা দামী মিঞাজাঁকি প্রজাতির আম। এরই মাঝে দুবরাজপুরের এই আম নিলামে ১০ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। তারপরেই আমার গাছের বাগানে উঁকিঝুঁকি বাড়তে থাকে।”
উল্লেখ্য, ফাঁকা মাঠের মধ্যে আমের গাছ। আপাতত দিনে রাতে গ্রামের কিছু লোককে পাহারায় বসিয়ে নিজে গাছতলায় থাকেন গাছের মালিক। মান্নান সাহেব দাবি করেন, “আমার কাছে বিরল আমের সন্ধান পেয়ে ইতিমধ্যে অসম, লখনউ, কলকাতা থেকে বরাত আসতে শুরু করেছে। বরাত হিসাবে তারা কিছু টাকা পাঠিয়ে রেখেছে। সকলকেই প্রতিটি আম দশ হাজার টাকায় বিক্রি করার চুক্তি করেছি। কিন্তু এখনও আমগুলি পাকেনি। এরই মধ্যে নজরদারি, আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও গাছ ছেড়ে যেতে পারছি না। চারটি গাছের মধ্যে দু’টিতে এবার ফলন হয়েছে। সঙ্গে আমেরিকান প্রজাতির গাছও আছে।” মান্নান সাহেব জানান, “এই মুহূর্তে এ বছর সিসি ক্যামেরা হয়তো কিনতে পারব না। তবে আমের নিরাপত্তার দাবিতে পুলিশের কাছে দরখাস্ত করব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.