রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ফের জঙ্গলের সীমানা পেরিয়ে লোকালয়ে তাণ্ডব চালাল বাইসন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া ভোলার ডাবরি এলাকায় ঢুকে পড়ে বাইসনটি। তার সামনে পড়ে যান ২ জন স্থানীয় বাসিন্দা। বাইসনের গুঁতোয় তাঁরা জখম হন। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২ জনকেই।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, সোমবার বিকেল নাগাদ চিলাপাতা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়েছিল ৩টি বাইসন। এদের মধ্যে দু’টি ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হলেও, একটি সেসময় ওই এলাকা থেকে অন্যত্র সরে পড়ে। রাতভর তার জন্য তল্লাশি চলে। এরপর মঙ্গলবার সকালে ভোলার ডাবরিতে তার আকস্মিক উদয়ের খবর পেয়ে ফের ছুটে যান বনকর্মীরা। এবার আর ঘুমপাড়ানি গুলি এড়িয়ে পালাতে পারেনি বাইসনটি। যাবতীয় তাণ্ডব থেমে যায় সেখানেই। এরপর তাকে বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তারপর বক্সা ব্যঘ্র প্রকল্পের বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে শহর লাগোয়া এলাকায় আচমকা বাইসন ঢুকে পড়ায় এলাকাবাসী এখনও আতঙ্কে।
[নামেই টাইগার রিজার্ভ, বাঘের দেখা নেই বক্সায়]
উত্তরবঙ্গের জঙ্গল এলাকায় বন্যপ্রাণী আর মানুষের একটা অলিখিত লড়াই চলছেই। কখনও জঙ্গল থেকে খাবারের অভাবে হিংস্র জন্তুরা লোকালয়ে ঢুকে মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে, আবার কখনও এলাকা দখলের লড়াইয়ে একে অন্যকে নিহত করছে চারপেয়েরা। বাস্তুতন্ত্রের প্রাথমিক সামঞ্জস্য তো টলে যাচ্ছেই। সেইসঙ্গে রয়েছে বন্যদের ওপর মানুষের অত্যাচার। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ঢুকে নির্বিচার পশুহত্যা চলছে। চোরাকারবারে বাড়তি মুনাফা লাভের জন্য আবার সেই মৃত পশুর চামড়া ছাড়ানো, দাঁত উপড়ে নেওয়া – কোনও কিছুতেই রেয়াত নেই। তারওপর নগরায়নের জন্য জঙ্গল একটু একটু করে সাফ হচ্ছে। বৃক্ষনিধন চলছে যথেচ্ছভাবে। খাবারের অভাবে বাধ্য হয়েই চেনা পরিবেশ ছেড়ে মাঝেমধ্যে অচেনা পরিবেশে ঢুকে পড়ছে বাইসন, চিতা জাতীয় পশুরা। সেভাবেই হয়ত সোমবার বিকেলে লোকালয়ে গিয়েছিল ৩টি বাইসন। শেষপর্যন্ত তাদের ফের স্বস্থানে পাঠাতে সমর্থ হয়েছেন বনকর্মীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.