ছবি: প্রতীকী
বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিভোর্সি এক মহিলার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সহবাস, শারীরিক নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগরের এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। নির্যাতিতা ওই মহিলা ইতিমধ্যেই কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও ২ দিন কেটে গেলেও পুলিশ ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিজেপি নেতার নাম অভয়কুমার চৌধুরী। তিনি বিজেপির কৃষ্ণনগর উত্তর শহর মণ্ডলের সহ-সভাপতি। ডিভোর্সি ওই মহিলা কৃষ্ণনগরে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকেন। তাঁর একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাছে তিনি জানান, “অভয়কুমার চৌধুরীর সঙ্গে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে আমার পরিচয় হয়। সেই সময় থেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ২০২২ সালের ২২ জুন পর্যন্ত জোরপূর্বক সহবাস করেছেন। বর্তমানে আমি একটি ভাড়াবাড়িতে থাকি। আমার একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। আমি একটা সময় সহবাসে রাজি হতাম না। তখন উনি আমাকে এবং আমার ছেলেকে মারধর করেছেন। অফিসে এসেও আমাকে বিরক্ত করা শুরু করেন। আমি ওনার বিষয়টি তাঁর পরিবারকে জানাতে বাধ্য হই। কিন্তু উনি হুমকি দেন, আমি যদি ওনার সঙ্গে সহবাসে রাজি না হই এবং তাঁর পরিবারের সম্মান নষ্ট করি, তখন আমাকে আর আমার ছেলেকে খুন করবেন। বাধ্য হয়ে আমাকে ফের সহবাসে রাজি হতে হয়। আমি বারবার তাকে আমাকে বিয়ে করার অনুরোধ জানাই। আমি মানসিক অবসাদে ভুগছি।”
১৫ জুন আমি একটি সংবাদপত্রে ওই মহিলা বিয়ের বিজ্ঞাপন দেন। কিন্তু তখন অভয়কমার চৌধুরী বিয়ের আগে ২০ লক্ষ টাকা এমআইএস করে দেওয়ার দাবি জানান। না দিলে তিনি মহিলাকে ও তাঁর ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে নির্যাতিতা পুলিশের দ্বারস্থ হন। এর আগেও ওনার নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি ফের পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। নির্যাতিতা ওই মহিলার আট বছরের ছেলের অভিযোগ, অভয়কুমার চৌধুরী নামে ওই ব্যক্তি তাদের বাড়িতে গিয়ে মারধর করে। যদিও অভিযুক্ত অভয়কুমার চৌধুরীর বক্তব্য, “আমার নামে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমার বয়স প্রায় ৭০ বছর। আমার মেয়ের বয়স ৪০ বছর। ওই মহিলা অষ্টম শ্রেণীর পাশ ছিলেন। তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার জন্য আমি সাহায্য করেছি। এবং তাকে একটি অস্থায়ী চাকরির ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। ওই মহিলার চরিত্র ভাল নয়। একটা সময় আমি তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এখন সে বেইমানি করছে। আমি বিজেপির কৃষ্ণনগর শহর উত্তর মণ্ডলের সহ-সভাপতি ছিলাম। তবে আমার নামে অভিযোগ দায়ের করায় আমি দলের ভাবমূর্তি যাতে নষ্ট না হয়, তাই সোমবার ওই পদ ত্যাগ করেছি।
নির্যাতিতা ওই মহিলার বক্তব্য, “আমি অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁকে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি। আমি পুলিশের কাছে তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য আবেদন করেছি। পুলিশের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, “ওই মহিলার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.