আদালতে তোলা হচ্ছে ধৃতকে। নিজস্ব চিত্র
অর্ক দে, বর্ধমান: পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। দোকান ভাঙচুরের পাশাপাশি কিশোরের গায়ে গরম দুধ ঢেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই পলাতক ছিল বর্ধমান ২ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক অমিত মাকড়। ওই ঘটনার পর প্রায় একমাস গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও শেষরক্ষা হল না। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার পলাতক ওই বিজেপি নেতা।
কিশোরের গায়ে গরম দুধ ঢালার পরই ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় গা ঢাকা দিয়ে থাকছিল অভিযুক্ত। বর্ধমানের পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কখনও বীরভূম, কখনও কলকাতা, কখনও রাজ্যের অন্যান্য জেলায় গা ঢাকা দিচ্ছিল অমিত মাকড়। পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও গিয়েছে বলে জানা যায়। তদন্তকারীদের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে, ঝাড়খণ্ডের পাকুড় এলাকার একটি হোটেলে ওই বিজেপি নেতা গা ঢাকা দিয়ে আছে। এরপরই ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
ঝাড়খণ্ড পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমানের পুলিশ আধিকারিকরা পাকুড়ে হানা দেন গতকাল শুক্রবার। ওই হোটেল থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার ধৃতকে বর্ধমানে এনে জেলা আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতকে ৪ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজেপি নেতা গ্রেপ্তারে মুখে কুলুপ গেরুয়া শিবিরের। বিজেপি নেতার ‘দাদাগিরি’র ঘটনাটি ঘটেছিল এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি। দেওয়ানদিঘি এলাকার একটি চালকলের অদূরে চায়ের দোকান চালান উমাশঙ্কর সাউ নামে এক ব্যক্তি। দোকানের সঙ্গেই তাঁদের থাকার ঘর। বছর খানেক আগে ওই ব্যক্তি ব্যক্তিগত কারণে মির্জাপুরের বাসিন্দা পেশায় ইমারত ব্যবসায়ী অমিত মাকড়ের থেকে দফায় দফায় ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। ভাগে ভাগে সেই টাকা মেটানো হবে বলে দু’জনের মধ্যে কাগজে লেখাপড়াও হয়েছিল বলে খবর। সেই মোতাবেক চা বিক্রেতা উমাশঙ্কর সাউ অনেক টাকা শোধ করছিলেন বলে দাবি।
এদিকে পাওনা টাকার জন্য বিজেপি নেতা বার বার চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় ১৯ এপ্রিল দুপুরের উমাশঙ্করের দোকানে পাঁচ সঙ্গীকে নিয়ে হানা দেন ওই ইমারত ব্যবসায়ী বিজেপি নেতা। সেসময় দোকানে ছিলেন না উমাশঙ্কর। ছিল তাঁর ১২ বছরের ছেলে। অভিযোগ, অমিত মাকড় সঙ্গীদের নিয়ে দোকান ভাঙচুর শুরু করে। হামলার প্রতিবাদ করেছিল দোকানে থাকা ওই কিশোর। ‘শাস্তি’ হিসেবে দোকানে গামলায় থাকা গরম দুধ কিশোরের গায়ে ঢেলে দেওয়া হয়। শরীরের অনেকটা অংশ পুড়ে গিয়েছিল ওই কিশোরের। ওই নেতার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তারপর থেকেই অভিযুক্ত পলাতক ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.