ফাইল ছবি।
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার নান্দাভাঙ্গা শালতিঘাটার সভা থেকে তৃণমূলকে একহাত নিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, ২০১৮ ও ২০২১-এর ভোটের পর যে অত্যাচার হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুদে ও আসলে পরিশোধ করব। সুর চড়ালেন নওশাদ সিদ্দিকির হয়েও। সংখ্যালঘু ভোট নিজেদের ঘরে টানলেই এই কৌশল, দাবি ওয়াকিবহল মহলের।
দলীয় কর্মীদের শুভেন্দুর নির্দেশ, “গ্রামে গ্রামে চাটাই বৈঠক, উঠান বৈঠকে জোর দিন। মোদিজির বিপুল কর্মকাণ্ড ঘরে ঘরে প্রচার করুন। আপনারা জেগে উঠুন, তৈরি হন। আগামিদিন জোর লড়াই। আপনারা সঙ্গে থাকবেন। এ লড়াই জিততেই হবে। পঞ্চায়েত ভোটে পদ্মফুল ফোটাতেই হবে।” এরপরই তিনি বলেন, “যেখানে বিডিও অফিস আটকাবে আমাকে পরদিন ডাকবেন, আমি বিডিও অফিসে ঢুকিয়ে দিয়ে আসব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোটে হারিয়ে আমি যেমন কালীঘাটের বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়েছি, একইভাবে এই জেহাদিদের ভিতরে ঢোকাবো।” দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দুর বার্তা, “জানি আপনারা প্রস্তুত। শুধু বলেন, ভয়টা কাটিয়ে দিন, নমিনেশনটা করিয়ে দিন, ব্যালটে ছাপটা যাতে মানুষ লাগাতে পারে তার ব্যবস্থা করে গণনার দিন নন্দীগ্রামের মত আমাদের পাহারা দিন। তাহলেই আমরা ছক্কা মারবো। শুনে রাখুন, ডায়মন্ডহারবারে পঞ্চায়েত নির্বাচন এবার আপনাদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী করবে। অক্কা পাবে তৃণমূল কংগ্রেস।”
সম্মেলন মঞ্চে শুভেন্দু বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গণতন্ত্র নেই। সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হয়েছে এখানে। তৃণমূলের কয়েকজন নেতা এই জেলাকে কার্যত জেহাদিদের জেলায় পরিণত করেছে। বজবজের পূজালিঘাট থেকে বালিয়ার গরু পাচার চলছে। আমার কাছে ভিডিও, ছবি সব রয়েছে। যাঁরা ভারতবর্ষে দেশবিরোধী কাজে সাহায্য করছে তাঁদের যোগী আদিত্যনাথের মত বুলডোজার চালিয়ে আবার যেখান থেকে এসেছিল সেখানেই ফিরিয়ে দেবে বিজেপি। শুধু আপনারা সঙ্গে থাকুন।” ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ভাইপো’ বলে সম্বোধন করে শুভেন্দু কটাক্ষ করেন, “আমার জেলায় গিয়ে বড় বড় কথা বলে। ও কোনও বক্তাই নয়।” সাংসদকে কটাক্ষ করতে গিয়ে সম্মেলন মঞ্চে একসময় ভাষার শালীনতার সীমাও ছাড়ান তিনি। সম্মেলন শেষে সংবাদ মাধ্যমের কাছে মেঘালয়ের তৃণমূল প্রসঙ্গে শুভেন্দুর কটাক্ষ, “মেঘালয়ে তৃণমূল হল স্যান্ডো গেঞ্জির বুকপকেট।”
এদিন নওশাদের হয়েও সুর চড়ান শুভেন্দু। বলেন, “নওশাদ সিদ্দিকির মত সম্মানীয় একজন বিধায়ক সে কি চোর না ডাকাত? সম্মানীয় একটি পরিবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। সেই পরিবারের ছেলেকে যেভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে যেভাবে পুলিশ হেফাজতে আটকে রাখা হয়েছে তা চোর ডাকাতদের ক্ষেত্রেও হয় না। তাহলে আরাবুল বাইরে কেন? এই সংখ্যালঘু মুসলিমরা এটা বুঝুক, দেখুক এবার কাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে তারা। আদিত্যনাথজি কিন্তু ভালবাসা দেন, অধিকার দেন। এমন অত্যাচার করেন না। অথচ মুসলমানরা দলবেঁধে ভোট দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে এনেছেন। মুসলমানদের ভোটে উনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। অমুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। আমি যেমন পুরোপুরি হিন্দু ভোটে জিতেছি। আমার এলাকায় ৬৫ হাজার মুসলিম ভোটের ৬৪ হাজার ভোট উনি পেয়েছেন। আমি, মীনাক্ষী সামান্য ভোট পেয়েছি। অথচ তাদের ওপরই সবচেয়ে বেশি অত্যাচার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন। আর কেবল এনআরসি ও বিজেপির জুজু দেখাচ্ছেন।” নওশাদ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, “সব ষড়যন্ত্রকারীরা এক জায়গায় হচ্ছে। আগে বাম-কংগ্রেসকে সাহায্য করছিল। এবার এমন পরিস্থিতি করছে যাতে বিজেপির সুবিধা হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.