পুরুলিয়ায় ফের শেষ হাসি হাসলেন বিজেপির জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। ফাইল ছবি।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: এডিএমকে স্মারকলিপি দিতে না পেরে আমলাদের রীতিমতো হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। মঙ্গলবার বিজেপির যুব মোর্চার পুরুলিয়া জেলা কমিটি কর্মসংস্থান-সহ একাধিক দাবিতে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে আসে। এই কর্মসূচিতে সাংসদ তথা দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ছাড়া ছিলেন দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, আরেক জেলা সাধারণ সম্পাদক বিবেক রাঙ্গা।
কিন্তু জেলাশাসক প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি ওই স্মারকলিপি অতিরিক্ত জেলাশাসকের (উন্নয়ন) কাছে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তাঁরা অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) কাছে যান। সেখানে তাঁকে না পেয়ে বিজেপি ক্ষোভ উগরে দেয়। পরে এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট স্মারকলিপি নিতে চান। কিন্তু তারা স্মারকলিপি না দিয়ে চলে আসেন। এমনকি সাংসদ রীতিমতো আমলাদের হুমকি দিয়ে বসেন। আর সেই হুমকির ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি জানায়, প্রশাসন স্মারকলিপি নিতে না চাওয়ায় তারা ৭ নভেম্বর শহর পুরুলিয়ায় পথে নেমে মৌন প্রতিবাদ মিছিল করবে।
এদিন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনিক ভবনে দাঁড়িয়ে সাংসদ বলেন, “আমরা কয়েকটি দাবি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে এসেছিলাম। কিন্তু জেলাশাসক ব্যস্ত থাকায় আমাদেরকে এডিএমের কাছে স্মারকলিপি দিতে বলা হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম তিনি নেই। শুনলাম তিনি নাকি অসুস্থ। অথচ পাঁচ মিনিট আগে ছিলেন। এই সরকার, প্রশাসন আমাদের মুখোমুখি হতে চাইছে না। একজন গেজেটেড অফিসারকে দিয়ে স্মারকলিপি নিতে চাইছে। তারা স্মারকলিপি নিতে ব্যর্থ। এরা ছেলেখেলা করছে। আমাকে বসতে পর্যন্ত বলা হয়নি। এইরকম অকর্মণ্য সরকার বেশি দিন চলতে পারে না। আমি খবরদারি করে দিয়ে যাচ্ছি। দিদি তো চলে যাবেন। আপনাদের কিন্তু চাকরি রয়ে যাবে। একবছর পর আমাদের সরকার আসবে। কিন্তু তখন বুঝে নেবেন কি হবে?”
জনসভা-সহ দলের নানান কর্মসূচিতে আমলাদেরকে এখন আক্রমণ করছে বিজেপি। এই জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপি আমলাদেরকে টার্গেট করেছে বলেছে বলে অভিযোগ। পুলিশের পাশাপাশি তারা সাধারণ প্রশাসনের কর্তাদেরকেও আক্রমণ করছেন। এদিন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “স্মারকলিপির সময় ছিল দুপুর আড়াইটে। ওই সংগঠন দুপুর দু’টোর আগেই আসে। আমি প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় এডিএম ডেভেলপমেন্টের কাছে স্মারকলিপি দিতে বলি। কিন্তু তাঁরা এডিএম জেনারেলের কাছে যান। তবুও আমরা স্মারকলিপি নিতে চাই কিন্তু তারা চলে যান বলে শুনেছি।”
এদিন তারা শহর পুরুলিয়ার জুবিলি ময়দান থেকে মিছিল করে জেলা প্রশাসনিক ভবনে যান। এদিন সাংসদ বলেন, “আমি সংসদের ল এন্ড জাস্টিস কমিটির সদস্য। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন স্মারকিলিপি না নিয়ে যেভাবে অসম্মান করল এই বিষয়টি আমি কমিটির চেয়ারম্যানকে জানাব। জানাব লোকসভার স্পিকারকে। বিষয়টি সংসদে তুলব।” এদিন তিনি জেলা প্রশাসনিক ভবন থেকে ঝালদা বনাঞ্চলেও দলের স্মারকিলিপি কর্মসূচিতে যান। ওই বনাঞ্চলের কুটিডি এলাকায় বনদপ্তরের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে এই অভিযোগ তুলে সেখানেও মিছিল করে রেঞ্জ আধিকারিককে স্মারকলিপি দেয় ঝালদা এক নম্বর ও শহর মণ্ডল। ওই স্মারকলিপি কর্মসূচিতেও ছিলেন সাংসদ। সেখানেও তিনি বনদপ্তর-সহ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে মেজাজ হারান।
ছবি ও ভিডিও : সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.