ছবি: প্রতীকী
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ব্যারেজের লকগেট ভেঙে বিপত্তির মাঝেই আরেক বিপদ দুর্গাপুরে (Durgapur)। আজ বেলার দিকে দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেডে বড় বিস্ফোরণ (Blast) ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, একজনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় দুটি পা উড়ে গিয়েছে আরেক শ্রমিকের। গুরুত্ব জখম অবস্থায় তিনি হাসপাতালে ভরতি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল আতঙ্ক দুর্গাপুর জুড়ে। কীভাবে, কোথা থেকে এমন বিস্ফোরণ হল, খতিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কারখানার রাসায়নিক সামগ্রী থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
মঙ্গলবার সকাল এগারোটা। ডিপিএলের (DPL) ৭ নম্বর কনস্ট্রাকশন গেটের কাছে আচমকা প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। সেই শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। গেট থেকে সামান্য দূরেই বাগান পরিচর্যা করছিলেন ঠিকা কর্মী ওম প্রকাশ চৌহান। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর দেহ। পাশেই ছিলেন আরেক ঠিকা কর্মী রাম রুইদাস। উড়ে যায় তাঁর দুটি পা। তাঁকে ভরতি করা হয় দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। ডিপিএলের দাবি, বিদ্যুতের কেবল ফেটে এই বিস্ফোরণ ঘটেনি। তবে কি বিস্ফোরক থেকেই এই বিরাট দুর্ঘটনা ঘটল? উঠছে বড়সড় প্রশ্ন।
বিস্ফোরণের খবর পেয়ে কোকওভেন থানার পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের কমিশনার সুকেশ জৈন জানান, “ডিপিএলের রাসায়নিক থেকেই এই বিস্ফোরণ বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। বিস্ফোরক জাতীয় কিছু নয় বলেই অনুমান। কারখানার ভিতরেই ছিল এই রাসায়নিক। বাইরে থেকে আনা হয়নি বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।”
ডিপিএলের পাওয়ার প্ল্যান্টের জিএম গোপীনাথ মাজি জানান, “ বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কোনও বিস্ফোরণ হলে ঝলসে যেত দেহ। টুকরো টুকরো হয়ে যেত না। কোনও বিস্ফোরক থেকেই এই দুর্ঘটনা হতে পারে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।” কর্তৃপক্ষ এই মতপ্রকাশের পর আতঙ্ক আরও বাড়ে কর্মীদের। কীভাবে গেটের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে ঢুকল বিস্ফোরক? ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র জানান, “বিদ্যুতের কেবলে কিছু হয়নি। এই ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই খতিয়ে দেখবে কারণ।” খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বনাথ পারিয়ালও। আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়, “বিস্ফোরক থেকেও এই ঘটনা হতে পারে। নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল। উচ্চপর্যায়েরতদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।”
এদিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজের ভেঙে যাওয়া ৩১ নং লকগেট মেরামতির কাজ এখনও শুরু হয়নি। বাঁধ দেওয়া যায়নি জলের তোড়েও। তবে ইঞ্জিনিয়ারদের আশা, সন্ধের মধ্যে বিকল্প ব্যবস্থা করে মেরামতির কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। জলসংকট আজও অব্যাহত শিল্পনগরীতে। ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে চলছে জল সরবরাহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.