নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ‘বোম্বে ও’ গ্রুপ একটি দুষ্প্রাপ্য রক্তের গ্রুপ। সেই দুষ্প্রাপ্য গ্রুপের রক্তের সন্ধান মিলল। তার আদানপ্রদানও হল বোলপুরে। পাশাপাশি ওই গ্রুপের আরও একজন রক্তবাহকের সন্ধান মিলল বীরভূমে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি জানাচ্ছেন, বোলপুরে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে এক প্রৌঢ়ার শরীরে ওই দুষ্প্রাপ্য রক্তের নমুনা মেলে। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম জেলায় আরও একজনের শরীরে ‘বোম্বে ও’ গ্রুপের একই রক্ত থাকায় তাকে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
এই রক্ত পরিবহনের ক্ষেত্রে সিউড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উদ্যোগ নেয়। সেই সংগঠনের উদ্যোক্তা প্রিয়নীল পাল জানান, ”আমাদের সৌভাগ্য জেলায় আরও একজনের রক্তে এই দুষ্প্রাপ্য রক্তের সন্ধান মিলল।আমরা দু’জনের মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে চন্দ্রপুর থেকে ওই রক্তদাতাকে বোলপুর নিয়ে গিয়ে ব্যবস্থা করতে পেরেছি।”
বছর তিনেক আগে ১২ জানুয়ারি একটি রক্তদান শিবির থেকে ‘বোম্বে ও’ গ্রুপের ( Bombay blood group) রক্তের সন্ধান মেলে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ওই গ্রুপের রক্ত রাজ্যে আগে চারজনের ছিল। পঞ্চম ব্যক্তি হিসাবে ওই যুবকের দেহে মিলেছিল। রক্ত পরীক্ষক চিকিৎসকদের মতে রক্তের নমুনাটি দেখতে অনেকটা ‘ও’ গ্রপের মতন। কিন্তু আসলে সেটা ও গ্রুপের ঠিক বিপরীত। তাই যে কাউকে এই রক্ত দেওয়া যায় না। গ্রহণও করা যায় না। যেহেতু বম্বে শহরে এক যুবকের দেহে প্রথম এই রক্তের নমুনা পাওয়া গিয়েছিল, তাই সারা পৃথিবীতে এই ধরনের রক্তের নমুনা ‘বোম্বে ও’ গ্রুপ নামে পরিচিত। রাজ্যে এ নিয়ে ছ’জন হল। সারা দেশে ৪০ থেকে ৫০ জনের শরীরে তা পাওয়া যায়। স্বভাবতই চন্দ্রপুর ও বোলপুরের দুজনের পরিচয় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে গোপন রাখা হয়েছে। কারঁ তাঁদের মতে একবার তাঁদের সন্ধান মিললে তাঁর রক্ত পরীক্ষা বা তাঁকে নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে।
হিমাদ্রি আড়ি জানান, ওই প্রৌঢার পড়ে গিয়ে হাত ভাঙে। তিনি বোলপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভরতি হন। তার রক্তের নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে ‘বোম্বে ও’ গ্রুপের রক্তের সন্ধান মেলে। নিশ্চিত হতে ফের তার শরীরের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করে একই ফলাফল বের হয়।তারপরেই দুর্গাপুরের একটি রক্তদাতা গ্রুপের সূত্র ধরে সিউড়িতে বীরভূম ভলেন্টিয়ারি ব্লাড ডোনার্স এসোশিয়েসনের কাছে খবরটি এসে পৌঁছায়। নিয়ম অনুসারে সরকারি হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে দু জনের শরীরের ফের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়। দুটি গ্রুপ মিলে গেলে স্বাস্থ্য দপ্তর ছাড়পত্র দেয়। তারপরই চন্দ্রপুরের ওই যুবক শারিরীকভাবে অসুস্থ । তাসত্বেও তিনি জেলার এক প্রৌঢ়াকে বাঁচাতে নিজেই বুধবার সন্ধ্যায় বোলপুরে হাজির হন। কারণ স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে তার প্রথম দান করা রক্ত দেশের সীমানা ছাড়িয়ে শ্রীলঙ্কায় চাহিদা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.