সোমনাথ পাল, বনগাঁ: রীতিমতো পরিকল্পনা করে প্রেমিককে খুন করার অভিযোগে প্রেমিকা ও তার দাদাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের অাদেশ দিলেন বনগাঁ অাদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অসীমকুমার দেবনাথ। দণ্ডপ্রাপ্ত দু’জনের নাম তপতী মণ্ডল ও তার দাদা গৌরব মণ্ডল।
অভিযোগ, ২০১০ সালের জুলাই মাসে গোবরডাঙা স্টেশনের পাশে লাইনের ধারে একটি ফাঁকা মাঠের মধ্যে পলাশ চক্রবর্তীর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই পলাশের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে গাইঘাটা থানার দেবীপুরের বাসিন্দা গোপাল মণ্ডলের মেয়ে তপতী মণ্ডল। কিন্তু তপতীর পরিবারের পক্ষ থেকে এই সম্পর্ক মানতে চায়নি কেউ। তাই পলাশকে পরিকল্পনা করে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করে তারা। সেই অনুযায়ী গোবরডাঙা স্টেশনের সামনে একটি ফাঁকা মাঠে পলাশকে ডেকে নেওয়া হয়। অভিযোগ, এরপর তপতী ও তার দাদা গৌরব পলাশকে বেধড়ক পিটিয়ে মদের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারাই অচৈতন্য ও অাশঙ্কাজনক অবস্থায় পলাশকে উদ্ধার করে কলকাতার অারজি কর হাসপাতালে ভরতি করে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এরপরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে অান্দোলন শুরু করেন। পুলিশ অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের গ্রেপ্তারের পর অাদালতে তোলা হলে জামিন পায় তারা। টানা অাট বছর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন অন্তত ষোলো জন সাক্ষ্যদানের পর দুই অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হয়। দু’জনের শাস্তি ঘোষণা করে অাদালত। সরকারি অাইনজীবী সমীর দাস বলেন, প্রেমিককে পরিবার মেনে না নেওয়ায় বারকয়েক অাত্মহত্যারও চেষ্টা করে তপতী। তবে কেউ অাইনের ঊর্ধ্বে নয়। এই রায় সেই কথাই স্পষ্ট করল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.