ছবি: প্রতীকী
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: কলকাতা ফেরত যুবক করোনায় আক্রান্ত। প্রতিবেশীদের মুখে এই অপবাদ এবং গুজব ছড়ানো সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার এক যুবক। গাইঘাটা থানার অন্তর্গত কেমিয়া এলাকার বাসিন্দা রাকেশ দাস নামে যুবকের পরিবার এমনই অভিযোগ তুলছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাকেশ পেশায় আইসক্রিম ব্যবসায়ী। কর্মসূত্রে কলকাতায় যাতায়াত ছিল। কাজ ঠিক মত না হওয়ায় ১৪ দিন আগে কলকাতা থেকে তিনি গাইঘাটায় নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। ফেরার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর সেই অসুস্থতা থেকেই পাড়ায় রটে যায়, রাকেশের শরীরে বাসা বেঁধেছে নোভেল করোনা ভাইরাস। প্রতিবেশীরাও রাকেশের মাকে ছেলের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেননি। দেখা করতে দিচ্ছিলেন না বলেও অভিযোগ। এদিকে, রাকেশকেও বাড়ির বাইরে যেতে দেওয়া হত না।
এসব দেখে রাকেশকে চাঁদপাড়া হাসপাতালে তাকে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাঁর পরীক্ষা করে করোনার কোনও লক্ষ্মণ খুঁজে পাননি। পরিবারের দাবি, রাকেশ অনেকদিন ধরে ব্রঙ্কাইটিসে ভুগছিলেন। কিন্তু তিনি করোনা আক্রান্ত, একথা রটে যাওয়ার পর পাড়ার আশা কর্মীরা বাড়িতে এসে রিপোর্ট পরীক্ষা করেন। প্রতিবেশীদের ওই দাবি তাঁরা নস্যাৎ করে দেন। তাতেও এলাকায় গুজব কমেনি। রবিবার বিকেলে রাকেশ নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তাঁর পরিবারের দাবি, “করোনা নিয়ে পাড়ার লোকেদের মিথ্যা রটনার জন্য আত্মগ্লানিতেই ছেলে আত্মহত্যা করেছে।”
গ্রামবাসীদের এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা এই রটনার কথা স্বীকার করে নেন। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যও এই গুজবের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আরও জানান, “কথাটা শোনামাত্রই পাড়ার লোকেদের সকলকে সচেতন করেছিলাম। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে গ্রামের আশা কর্মীদের রাকেশের বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। গ্রামবাসীর কাছে আবেদন করেছিলাম, কোনও ধরনের গুজব না ছড়াতে। পরে শুনলাম, ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। ” গুজব রুখতে উদ্যোগ নিলেও পঞ্চায়েত সদস্যের সেই উদ্য়োগ যে বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি, তা বোঝাই যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.