সুমন করাতি, হুগলি: বয়স আট বছর হবে। ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তার বোধ নেই। শুধু বারবার একটা কথাই শুনেছিল বিএসএফ জওয়ান বাবা পাকিস্তানের হাতে বন্দি। আদৌ মুক্তি পাবেন কিনা, তা নিয়ে একটানা ২২ দিন ধরে চলে স্নায়ুর লড়াই। বাবাকে ফেরাতে মায়ের সঙ্গীও হয়েছিল সে। অবশেষে স্নায়ুযুদ্ধের ইতি। ছাড়া পেয়েছেন বাবা। একদফা মোবাইলে কথা হয়েছে। খুশিতে ডগমগ পূর্ণমের ছেলে।
এই কয়েকদিন বাবার ছবি, দেখে চোখের জল ফেলেছে ছোট্ট আরব। মা রজনীর সঙ্গে দিনভর শুধু বাবাকে নিয়ে কথা বলত সে। ছোট্ট আরব জানায়, “পাকিস্তানে বাবাকে আটকে রেখে দিয়েছিল। খুব মনে পড়ত। বাবার ছবির সঙ্গে কথা বলতাম। জিজ্ঞেস করতাম কবে আসবে? বাবা এখন ইউনিটে ফিরেছে। আরও কোনও ভয় নেই।” বুধবার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর আশ্বস্ত হয়েছে পূর্ণমের খুদে সন্তান। ওই বিএসএফ জওয়ান ছেলেকে বলেন, “বেটা কোনও টেনশন নিবি না। পড়াশোনায় মন দে।”
বাবা বাড়িতে ফেরার যেন প্রহর গুনছে পূর্ণমের ছেলে আরব। সে বলছে, “বাবার কোলে শোব। বাবার পিঠে উঠে আবার ঘোড়া ঘোড়া খেলব।” ছেলেকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই ঘুরতে যেতেন পূর্ণম। আরব বলছে, “আবার যাব আমরা। বাবা বলেছে, অনেক উপহার দেবে।” এতদিন বাবাকে না পেয়ে যেন মুষড়ে পড়েছিল আরব। বুধবার যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা রজনীও বেজায় খুশি। এতদিন নাওয়া খাওয়াই ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। পূর্ণমের মুক্তির খবর পাওয়ার পর নতুন শাড়ি পরেছেন পাকিস্তানে বন্দি বিএসএফ জওয়ানের স্ত্রী। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বেশ কয়েকজন এদিন সন্ধেয় জওয়ানের বাড়িতে যান। ঠিক যেন উৎসবের আবহ। চলছে মিষ্টিমুখ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.