গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: সীমান্তে শতাধিক মালবাহী গাড়ি চালকের কাছে থেকে মিলল জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving License)। আরও বেশ কিছু চালকের কাছেও ভুয়া লাইসেন্স থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে দেশের সুরক্ষা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে বিএসএফ (BSF)। তাই এবার থেকে যাতে লাইসেন্স পরীক্ষা করেই চালকদের ‘পাস’ দেওয়া হয়, সেই ব্যাপারে শুল্ক দপ্তরকে সতর্ক করে চিঠি দিল বিএসএফ।
জাল লাইসেন্স নিয়েই কিছু ভারতীয় ট্রাকচালক সোনা, মাদক-সহ বিভিন্ন জিনিস বাংলাদেশ থেকে পাচার করছে বলে অভিযোগ। এমনকী, কোনও ট্রাকে করে জঙ্গিরা এই দেশে অনুপ্রবেশ করেছে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিএসএফের গোয়েন্দারা।
মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের বিএসএফের আইজি (IG) অনুরাগ গর্গ জানান, প্রত্যেকদিন উত্তর ২৪ পরগনা পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বহু ভারতীয় ট্রাক বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র নিয়ে বাংলাদেশের দিকে যায়। এই ট্রাকগুলির চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করে পাস দেয় শুল্ক দপ্তর। সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, একশোরও বেশি গাড়ির চালক, যারা বাংলাদেশে নিয়মিত মালবাহী গাড়ি নিয়ে যায়, তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ভুয়া। এর ফলে দেশের নিরাপত্তা ব্যাহত হতে পারে। আবার দুর্ঘটনা ঘটালেও সেই ট্রাকটিকে ধরা সম্ভব নয়। তাই এবার থেকে যাতে শুল্ক দফতর প্রত্যেকটি মালবাহী গাড়ির লাইসেন্স পরীক্ষা করে, সেই ব্যাপারে বিএসএফের পক্ষ থেকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
বিএসএফের গোয়েন্দারা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই মাসেই তিন দফায় তল্লাশি চালিয়ে ৯০ জন মালবাহী গাড়ি চালককে ধরেন, যাঁদের কাছ থেকে পাওয়া যায় ভুয়া লাইসেন্স। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসা ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে কয়েক লাখ টাকার সোনা ও মাদক উদ্ধার হয়। এর পরই তদন্ত করে জাল লাইসেন্সের বিষয়টি বিএসএফের গোয়েন্দাদের সামনে আসে।
এক আধিকারিক জানান, ট্রাকচালক সেজে যদি কোনও জঙ্গি দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করলেও সহজে তাকে ধরা সম্ভব হবে না। সেই কারণে কোনওমতেই জাল লাইসেন্স নিয়ে বাংলাদেশে ট্রাক নিয়ে যাওয়া বরদাস্ত করা হবে না। বিএসএফের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২,০৩৬ জন বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারীকে ধরা হয়। তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ মহিলা। কিন্তু মাত্র একটি ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে মামলা করা হয়েছে।
বিএসএফের দাবি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধরা পড়া মহিলারা অভিযোগ জানাতে চান না। সেই কারণেই মামলা হয় না। গত বছর মানব পাচারে ৮৪ জন দালালকেও ধরা হয়। যেখানে ২০১৯ সালে ২৯ হাজার ৭২০টি গরু ধরা পড়েছিল, সেখানে গত বছর ১,৬০৯টি গবাদি পশু ধরা হয়। তার সঙ্গে ৩০ কিলো সোনা ও ১৪ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট মাদক উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.