ছবিতে চলছে ছাত্র বিক্ষোভ, ছবি: মুকুলেসুর রহমান।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: প্রেসিডেন্সির পথেই হাঁটলেন বর্ধমান হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। হস্টেলে চূড়ান্ত অব্যস্থার প্রতিবাদে শনিবার দিনভর হস্টেল সুপারের পদত্যাগের দাবিতে চলল বিক্ষোভ। অধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যক্ষকে কলেজ কার্যালয়ে তালাবন্দি করে চলে বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভের জেরে সন্ধ্যায় হস্টেল সুপার পদত্যাগ করেন বলে খবর। পদত্যাগের খবর চাউর হতেই অধ্যক্ষ-সহ অন্যান্যরা ঘেরাওমুক্ত হন।
হোমিওপ্যাথি কলেজের হস্টেলের আবাসিকদের অভিযোগ, চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধে তাঁদের থাকতে হয়। ছাত্র আবাসনের ছাদের অবস্থা খুব খারাপ। মাঝেমধ্যেই সিলিংয়ের চাঙড় খসে পড়ে। বর্যাকালে ছাদ চুইয়ে জলপড়া নিত্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাপের খুব উপদ্রব। কোনও নিরাপত্তারক্ষীও নেই। কলেজ কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও সুরাহা হয়নি। তাই এদিন কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন আবাসিক ছাত্ররা। সহকারী অধ্যক্ষ তথা হস্টেল সুপার অসীমকুমার সামন্তর পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
হোমিওপ্যাথি কলেজে মোট পড়ুয়া রয়েছেন প্রায় ২৫০ জন। তারমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের পৃথক হস্টেল রয়েছে। ছাত্রদের হস্টেলে বর্তমানে ১৮ জন আবাসিক রয়েছেন। ছাত্রীদের হস্টেল নিয়ে অবশ্য তেমন কোনও সমস্যা নেই। ছাত্রদের হস্টেলের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অরিজিৎ দে বলেন, “ আতঙ্কে রাতে ঘুম হয় না। বিছানায় সিলিংয়ের চাঙড় খসে পড়ে। কলে পানীয়জলের কলের কাছে কেউটে সাপের উপদ্রব। কোনও নিরাপত্তারক্ষী পর্যন্ত নেই। কলেজে ভরতির সময় হস্টেলে সবরকম সুবিধা রয়েছে বলা হয়েছিল। কিন্তু কিছুই নেই।”
কলেজ কর্তৃপক্ষও হস্টেলের এসব সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। হস্টেল সুপার অসীমবাবু বলেন, “রাজার আমলের ভবন। তার ফলে একটু সমস্যা হচ্ছে। রাজমিস্ত্রি ডেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুজোর আগে ছাত্ররা একটা অভিযোগ করেছিল। ছুটির পর কলেজ খোলার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন সাফাইকর্মীও নেওয়া হয়েছে। শিগগির সমস্যা মিটে যাবে।” সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ পান্নালাল দে। তিনি বলেন, “পুরনো ভবন হওয়ায় সমস্যা রয়েছে। তবে তা দ্রুত মেটানো হচ্ছে। ছাত্ররা একটু আবেগের বশে এইভাবে আন্দোলন করে পদত্যাগ দাবি করেছেন। আমরা তাদের পাশে রয়েছি। যত দ্রুত সমস্যার সুরাহা করা যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে।” ছাত্ররা জানিয়েছেন, এখনকার মতো বিক্ষোভ থামলেও যদি প্রয়োজনীয় দাবিগুলি না মেটে, তবে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.