সৌরভ মাজি, বর্ধমান: লকডাউনের জেরে চৈত্র সেলের বাজার শুনসান, তীব্র মন্দা। এবার দুর্গাপুজোর বাজার নিয়েও চিন্তিত বর্ধমানের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে পয়লা বৈশাখ, ইদ, দুর্গাপুজোর বাজার মাটি হওয়ার আশঙ্কা করছেন। লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি হওয়ায় পুজোর বাজার নিয়ে এই চিন্তা শুরু হয়েছে তাঁদের।
চৈত্র সেল-পয়লা বৈশাখ ও ইদের জন্য মার্চের গোড়াতেই লক্ষ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র তুলেছিলেন বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। সেলের বাজার শুরুর আগেই করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে শুরু হয় লকডাউন। বন্ধ হয়ে যায় বাজার, দোকানপাট। বর্ধমান শহরের বিসি রোডে কার্জন গেট, দত্ত সেন্টার, রানিগঞ্জ বাজার, বড়বাজার-সহ শহরের সব বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা প্রমাদ গোনেন লকডাউনে। কয়েকশো বস্ত্র ব্যবসায়ীর আয়ের উৎস এই সব এলাকা। সকলেই কয়েক লক্ষ টাকার জামাকাপড়-সহ অন্যান্য বস্ত্র মজুত করেছিলেন। সব বাঁধাই পড়ে রয়েছে গোডাউনে। এইভাবে বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকলে একটা সময়ের পর তা নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
বস্ত্র ব্যবসায়ী সত্যজিৎ সাহা জানান, “আয় করার জন্য এই ক’টি সিজনই ভরসা। সারা বছর যা রোজগার, তা মূলত এই তিনটি সিজন থেকেই হয়। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, চৈত্র সেল ও পয়লা বৈশাখের বাজার তো শেষ। এবার ইদের বাজারও মার খেল। করোনার কারণে অর্থনীতিতে যা প্রভাব পড়বে তাতে সামনের দুর্গাপুজোর মরশুমেও মানুষের হাতে সেই পরিমাণ টাকা না থাকার প্রবল সম্ভাবনা। ফলে পুজোর বাজারে বিক্রি হবে না কিছুই।” এককথায়, বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ছেন তাঁরা। পয়লা বৈশাখে আবারা ধারদেনা মেটানোর একটা রীতি রয়েছে ব্যবসায়ী মহলে। এবার সেটাও হচ্ছে না।
ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলা লকডাউন দীর্ঘায়িত অর্থনীতিটাই ভেঙে পড়বে। অনেকেরই স্মৃতিতে উসকে উঠছে নোটবাতিলের সময়কার বিপর্যয়ের কথা। সেই সময়ও ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে অনেকটা সময় লেগেছিল। এবার লকডাউনের ক্ষত শুকোতে কতদিন লাগবে, তা নিয়ে চিন্তা যেন ক্রমেই বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.