নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বোলপুরে শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ খুলতে ৯ কোটি টাকার উৎস কী, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত চালাল সিবিআই। বুধবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দুই প্রতিনিধি দল বোলপুরে (Bolpur) শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার মলয় পিটের কলেজে পৌঁছায়। পাশাপাশি এদিন আমোদপুরের তৃণমূলের (TMC) অঞ্চল সভাপতি তথা চালকলের মালিক রাজীব ভট্টাচার্যকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই (CBI)। ডাকা হয় সুজিত দে নামে এক ব্যবসায়ীকেও।
মলয় পিট এবং রাজীব ভট্টাচার্য দুজনেই অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তদন্তের গতি বাড়াতে সিবিআই বুধবার শান্তিনিকেতনে তাদের অস্থায়ী শিবিরে রাজীববাবুকে ডেকে পাঠায়। উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরেই রাজীববাবুর সম্পত্তি উল্কা গতিতে বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ। তাছাড়া রাজীববাবুর নামে নানা স্থাবর সম্পত্তির হিসেব পেতে রেজিস্ট্রি দপ্তরেও খোঁজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সম্পত্তির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি চালকলের মালিকানা রাজীব ভট্টাচার্যের নামে আছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই চালকলগুলি নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি অনুব্রতকে ৬৬ লক্ষ টাকা দেওয়ার কারণও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। উল্লেখ্য, ক্যানসারে আক্রান্ত অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রী ছবি মণ্ডলের চিকিৎসার জন্য়ই ওই টাকা তিনি দেন। নিউটাউনের একটি ক্যানসার হাসপাতালে বিল তিনিই মিটিয়েছিলেন। এপ্রসঙ্গে রাজীবের জবাব, ‘’অনুব্রত মণ্ডলকে ওই টাকা ধার হিসাবে দিয়েছিলাম। এখনও সে টাকা ফেরত পাইনি।”
এদিন শান্তিনিকেতন ইনস্টিটিউট অফ পলিটেকনিক কলেজেও হাজির হয় সিবিআই। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক মলয় পিট। চলতি বছরেই তিনি একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ খুলেছেন। সেই কলেজ খুলতে ৯ কোটি টাকা জমা রাখতে হয়। এত টাকা কোথা থেকে এল তা জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। মলয়বাবু জানান, ”আমি সব লেনদেন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করেছি। অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই নিয়েছি।”
উল্লেখ্য, বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের চালকলে হানা দিয়ে তার ভিতরে মলয় পিটের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দুটি দামি চারচাকা গাড়ি পায় গোয়েন্দা সংস্থা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মলয়বাবু জানান, ”ইন্দিরা গান্ধী থেকে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় সকলেরই স্বপ্ন ছিল বোলপুরে মেডিক্যাল কলেজের। কিন্তু অনুব্রতবাবু সাহায্য না করলে এই কলেজ করতে পারতাম না। কলেজ তৈরিতে বিরাট অবদান আছে ওঁর। দাপটও বেশি। তাই অনুব্রতবাবু যখন গাড়ি চেয়েছেন তখন আর কিছু বলতে পারিনি। ট্রাস্ট্রের দুটি গাড়ি তাঁকে দেওয়া হয়েছিল।”
এদিকে এদিন সুজিত দে নামের এক ব্যবসায়ীকেও ডেকেছিল সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি জানান,অনুব্রতবাবু তাঁর কাছে হস্তরেখা বিচার করাতেন। নানা যাগযজ্ঞের বিষয়ে জানতে চাইতেন। কুষ্ঠি বিচারও করিয়েছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.