তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: আবাস যোজনার নামের তালিকা থেকে একলপ্তে বাদ পড়েছে ৬ হাজার নাম। আর তাতেই দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছে কেন্দ্র। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তড়িঘড়ি দিল্লি থেকে দল পাঠিয়েছে তারা। শনিবার রাজধানী থেকে নেমেই প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য সটান হাজির হন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অফিসে। সন্ধেয় দার্জিলিঙের সমস্ত বিডিও-সহ সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দুই আধিকারিক। তাঁদের ভূমিকা দেখে তৃণমূলের অভিযোগ, বাংলার মানুষকে উত্যক্ত করতেই এসব করছে কেন্দ্রে।
আবাস যোজনায় দার্জিলিং জেলায় ২৯ হাজার ৫০০ জনের নামের তালিকা জমা পড়েছিল। পরে তা স্ক্রুটিনি করতেই একধাক্কায় ৬ হাজার নাম বাদ পড়ে। আর এ দেখেই সন্দেহ বাড়ে কেন্দ্র সরকারের। শুধু দার্জিলিং নয়, রাজ্যের ৫ জেলার আবাস তালিকায় গরমিলের খবর মিলেছে। ৫ জেলায় তদন্তকারী দল পাঠিয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দুই প্রতিনিধি শিলিগুড়ি পৌঁছে বৈঠকে বসেছেন। জানার চেষ্টা করছেন, কেন একধাক্কায় এত নাম বাদ পড়ল?
কেন্দ্রের অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, “বাংলায় ভাল কাজ হচ্ছে। তারপরেও কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। আর্থিক বছরের শেষ দিকে টাকা পাঠাবে, নতুন নতুন শর্ত জুড়ে দেবে, প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করবে। তারপর বলবে টাকা খরচ হচ্ছে না! আসলে বাংলার মানুষ ওদের (বিজেপি) প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই বাংলার মানুষকে উত্যক্ত করতে এসব করছে।” তৃণমূলকে পালটা দিয়েছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, বাংলার আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে। মানুষ এগিয়ে এসে অভিযোগ করছে। তৃণমূল বিপাকে পড়ছে। মানুষেক অভিযোগ দেখেই কেন্দ্র দল পাঠাচ্ছে।” সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় দলের রাজ্য সফর ঘিরে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি।
প্রসঙ্গত, আবাস যোজনার আওতায় বাংলার ১১ লক্ষ ৩৬ পরিবারকে বাড়ি বানানোর খরচ হিসাবে নভেম্বর মাসে ৮২০০ কোটি টাকা অনুমোদন করে কেন্দ্র। রাজ্যের দেওয়ার কথা সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। দিল্লি বলে দিয়েছিল, ৩১ মার্চের মধ্যে ওই টাকা উপভোক্তাদের দিয়ে দিতে হবে। সেই মোতাবেক এগোয় রাজ্য। কিন্তু এরই মধ্যে বিজেপির সাংসদরা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি দেন। তাঁদের অভিযোগ, এর আগের আবাসের টাকার হিসাব চাওয়া হোক। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক তারপরই ৪৯৩ পৃষ্ঠার একটি চিঠি পাঠিয়েছে নবান্নকে। তাতে বলা হয়েছে, এর আগে আবাস যোজনায় খরচের হিসাব নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল তার সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি। তার উত্তর আগে দেওয়া হোক, তবেই পরবর্তী বরাদ্দ হবে। এর পাশাপাশি আবাস যোজনার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.