রাজা দাস, বালুরঘাট: নিখোঁজ শিশুর দেহ উদ্ধারের পর পেরিয়ে গিয়েছে গোটা রাত। এখনও উত্তপ্ত বালুরঘাট (Balurghat)। স্থানীয়দের দাবি, গোটা ঘটনার পিছনে ঘুড়ি বিবাদকে দায়ী করা হলেও তা একেবারেই ভিত্তিহীন। পাচারের উদ্দেশ্যে ওই শিশুকে অপহরণ করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। এদিকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও একজনকে। এখনও পর্যন্ত মোট ধৃত ৫।
ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে বালুরঘাট পুরসভা এলাকার এ কে গোপালন কলোনিতে ৮ বছরের শিশুকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী যুবক মানস সিংয়ের বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধে থেকে নিখোঁজ ছিল দীপ হালদার নামে ওই শিশু। ওইদিন বিকেলে মানস নামে প্রতিবেশী যুবক তাকে ঘুড়ি কিনে দেবে বলে নিয়ে যায় বলেই অভিযোগ। ঘুড়ি কিনেও দেয়। এরপর সেই ঘুড়িটি নিয়ে ছোট্ট দীপ খেলতে যায় পাশের মাঠে। সন্ধে পেরিয়ে রাত্রি নামলেও বাড়ি ফেরেনি আট বছরের দীপ।
এরপরই খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার আত্মীয়স্বজনরা। কিন্তু তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। দীপ হালদারের ঠাকুমা দীপ্তি মোহন্তর অভিযোগ, স্থানীয় মানস সিং নামের এক যুবক গতকাল ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই দীপের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। এলাকাবাসী দাবি তোলেন, খুঁজে বের করা হোক অপহৃত শিশুকে। রবিবার সন্ধেয় বাড়ির অদূরে একটি খাল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় দীপের দেহ উদ্ধার হয়। তারপরই মানস সিং থানায় গিয়ে খুনের কথা কবুল করে আত্মসমর্পণ করে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। রাতেই মানস সিং, তার বাবা রবিন সিং, মা দুলো সিং এবং বোন মনোশি সিংকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে কী কারণে মানস এমন কাজ করল, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, ঘুড়ি নিয়ে অশান্তির জেরেই এই পরিণতি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব হন স্থানীয়রা। সোমবার সকালেও থমথমে এলাকা। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি খুনের নেপথ্যে ঘুড়ির যে তত্ত্ব তুলে ধরা হচ্ছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন। অনেকের দাবি, সম্ভবত পাচারের উদ্দেশ্যেই অপহরণ করা হয়েছিল শিশুটিকে। পরবর্তীতে কোনও কারণে তা সম্ভব হয়নি। এদিকে জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে খুন করা হয় শিশুটিকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.