ফাইল ছবি
অর্ণব আইচ: চিনা যুবক-যুবতীদের বিশেষ পছন্দ দার্জিলিংয়ের চা। হোক না চিন চায়ের দেশ। তবু চিনের যুবসমাজের কাছে চাহিদা বাড়ছে এই রাজ্যে উৎপাদন হওয়া দার্জিলিং চায়ের। এমনকী, অসমের চায়েরও চাহিদা রয়েছে চিনের বিভিন্ন প্রদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে। শুক্রবার সল্টলেকে নিজের বাসভবনে বসে কলকাতার চিনা কনসাল জেনারেল ঝা লিইউ জানান, এই চাহিদার জন্যই কলকাতা থেকে ভারতীয় চা চিনে রপ্তানির উপর গুরুত্ব দিচ্ছে চিন সরকার।
এদিকে, গত ৯ মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ভারতীয়কে চিনে যাওয়ার জন্য চিনা সরকার ভিসা দিয়েছে বলে দাবি কনসাল জেনারেলের। তিনি জানান, এর মধ্যে কলকাতা থেকে ৮ হাজার ভিসা দেওয়া হয়েছে। বাকিটা দিল্লি ও মুম্বই অফিস থেকে। ওই আট হাজারের মধ্যে প্রায় তিনশো ভিসা দেওয়া হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই চিনে মেডিক্যাল পড়তে গিয়েছেন। সেখানে খুব কম সংখ্যক চিনাদের ভারতে আসার ভিসা দেওয়া হচ্ছে। ঝা লিইউয়ের মতে, তাতে তিনি ভারাক্রান্ত নন। তবুও তাঁর আমলে কয়েকটি বিষয়ে খেদ রয়ে গিয়েছে। এখনও ভারত ও চিনের মধ্যে যাত্রীবাহী বিমান বন্ধ রয়েছে। তাঁর আশা, এই বছরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
দুদেশের বিমান চালু হলে কলকাতায় চিনা পর্যটক ও ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়বে। তাতে লাভ হবে দুই দেশের। এই ব্যাপারে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনাও হচ্ছে। এই বছর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন যাত্রার একশো বছর পূর্তি। এই উপলক্ষে আগামী মে মাসে বেজিংয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। সেখানে কলকাতা ও শান্তিনিকেতন থেকে অন্তত পাঁচজন অধ্যাপককে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। আবার বিশ্বভারতীর চিনা ভবনে কলকাতার চিনা দূতাবাসের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই মাসেই অবসর গ্রহণ করছেন কলকাতার চিনা কনসাল জেনারেল। ফেব্রুয়ারিতে তিনি চিনে ফিরে যাচ্ছেন। সেখানে ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ হিসাবে কর্মরত থাকতে পারেন তিনি।
গত কয়েক মাস ধরেই উত্তরবঙ্গে যাতায়াত করছেন চিনা আধিকারিকরা। ঝা লিইউ জানান, তিনি নিজেও দুরাত চা বাগানে কাটিয়েছেন। ভারত ও চিন দুই দেশই চা উৎপাদন করে। কিন্তু বড় পার্থক্য হচ্ছে, চা পান চিনের প্রত্যেক বাসিন্দার জীবনের অঙ্গ। তাই চিনের একেকটি প্রদেশে একেকরকম চায়ের চাষ হয়। সেখানে দার্জিলিং বা অসমে যত চা উৎপাদন হয়, তার অনেকটাই বিদেশে রপ্তানি হয়। ভারত ও চিনের চা ব্যবসায়ীদের সংগঠন নিজেদের মধ্যে যথেষ্ট যোগাযোগ রাখে। ফলে চিনে দার্জিলিং ও অসমে চা রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়ছে। কলকাতার বেশ কয়েকটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ম্যান্ডারিন চিনা ভাষা শেখার আগ্রহও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিনা কনসাল জেনারেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.