দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ভয়াবহ বিস্ফোরণ গঙ্গার পূর্ব পাড়ের নৈহাটিতে। তার জেরে পশ্চিম পাড়ে চুঁচুড়া শহরের বহু বাড়ির দরজা-জানালার কাচ ভেঙে পড়ল। আতঙ্কিতরা প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ঘরের পোশাকেই বাইরে বেরিয়ে এসে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন। অনেকেই মনে করেন এই বুঝি গোটা বাড়িটাই ভেঙে পড়বে। এই ঘটনার প্রতিবাদে চুঁচুড়ার বকুলতলায় পথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর পৌঁছলে তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।
দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ হঠাৎই তীব্র শব্দে কেঁপে ওঠে চুঁচুড়া। বেশ কিছুক্ষণ ধরে অনুভূত হয় কম্পনও। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না স্থানীয়রা। তারপর তাঁরা প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়েন। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে চুঁচুড়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ঘুঁটিয়াবাজার, বাবুগঞ্জ তামলিপাড়া, শিবতলা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতাপপুর, রথতলা, বকুলতলার প্রায় দু’শো বাড়ির জানালার কাচ ও দরজা ভেঙে পড়ে। বহু বাড়িতে ফাটল ধরে। অনেক বাড়ির প্লাস্টার খসে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিভিন্ন প্রশাসনিক ভবন। তবে স্থানীয়দের দাবি কমবেশি প্রায় ৫০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। উত্তেজিত জনতা ক্ষতিপূরণের দাবিতে বকুলতলায় রাস্তা অবরোধ করেন। পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর অবরোধস্থলে পৌঁছন। তাঁকে ঘিরে ধরে উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। পুলিশ কমিশনার জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “যাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁরা তাঁদের মোবাইলে ছবি তুলে রাখুন।” তারপর তিনি একটি মোবাইল নম্বর দেন। ওই নম্বরে তাঁরা যেন সেই ছবি ও তাঁদের নাম-ঠিকানা পাঠিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু ক্ষুব্ধ জনতা দাবি করতে থাকেন তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে দেখতে হবে পুলিশ কমিশনারকে।
পুরসভারই কর্মী সৌমিত্র সিংহ বলেন, “হঠাৎ আওয়াজে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে যাই। তারপরই জানালার কাচ ভেঙে পড়তে দেখে সকলে বাইরে ছুটে বেরিয়ে আসি। দেখি গঙ্গার দিকে আকাশজুড়ে কালো ধোঁয়ার কুন্ডলী।” চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার এই বিষয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আবির খেলার পর যেমন রাস্তায় পড়ে থাকে সেরকম গোটা শহরজুড়ে এখন পড়ে রয়েছে শুধু কাচের গুঁড়ো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.