ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আকাশ পথে ৮ জেলার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শেষে আরামবাগের হেলিপ্যাডে অবতরণ করে হেঁটে পৌঁছে গেলেন বন্যাকবলিতদের কাছে। জলে নেমে পরিদর্শন করলেন এলাকা। বার্তা দিলেন, “পাশে আছি”। তবে পুজোর ঠিক আগের এই দুর্যোগের জন্য ডিভিসিকেই দুষলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে তাদের ক্ষতিপূরণ চাওয়ার ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন তিনি। বললেন, “মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। ডিভিসি ক্ষতিপূরণ দিক।”
গত দু’দিন ধরে একের পর জলাধারের ছাড়া জলে ভেসেছে রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘরছাড়া লক্ষাধিক। সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির হিসেব এখনও মেলেনি। ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে শনিবার সকালে বেরিয়ে পড়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিদর্শনের পর তিনি জানিয়েছেন, বছরে চার বার জল ছাড়ছে ডিভিসি। এবারও ৫.৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। অন্তত ১ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ লক্ষ মানুষকে অন্যত্র সরানো হয়েছে।
প্লাবন নিয়ে আরামবাগের কালিপুরে দাঁড়িয়ে ডিভিসি এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, “৩০ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ ভোটের দিন রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছেড়েছে মাইথন-পাঞ্চেত-ডিভিসি।” সেখানে দাঁড়িয়ে তুলে ধরেছেন দু’দিন ধরে জল ছাড়ার খতিয়ানও। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, “ডিভিসির ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। বারবার তাদের ছাড়া জলে বন্যা হবে। ওরা তো কেন্দ্রের অধীনে। ওরা জল ছাড়বে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব আর ওরা টাকা আয় করবে, এটা হতে পারে না।”
একইসঙ্গে তাঁর দাবি, “ঝাড়খণ্ড সরকারের উচিত আমাদের সঙ্গে কথা বলা। আর কেন্দ্রকেও মাস্টার প্ল্যান দিতে হবে। জলাধারগুলি ড্রেজিং করলে আরও জল ধরে রাখা যেত। আর রাতের অন্ধকারে জল ছাড়া এটা বড় অপরাধ। রাতে মানুষ ঘুমাবে নাকি নিজেকে বাঁচাবে?” মুখ্যমন্ত্রীর আরও বলেন, “পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড আমাদের বন্ধু। ওদেরও অনুরোধ করব বিষয়টা নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসুক। আমাদের জানিয়ে জল ছাড়ুক।”
ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রসঙ্গে কেন্দ্রে একহাত নেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ওরা (কেন্দ্র) কিছুতেই টাকা দেয় না। আমফানে দেয়নি, বুলবুলেও দেয়নি। সব আমাদের দিতে হয়। কিন্তু দিতে দিতে তো আমাদেরও ফুরিয়ে যাবে। এবছর তো সব টাকা জলেই গেল।”
প্রসঙ্গত, বন্যা হোক কিংবা অন্য যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজ্যবাসীর পাশেই রয়েছেন তিনি। দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে ঝড়-জল মাথায় করে ছুটে যান তিনি। এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.