সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানুষের কাজ করতে হবে। পরিষেবা পৌঁছে দিতে হবে দুয়ারে দুয়ারে। রাজ্যবাসীর মন জয়ে বারবার এই বার্তা দিয়ে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকেও তার ব্যতিক্রম হল না। গুড়াপের সভা থেকে তিনি এবার জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের বললেন, ‘ব্যাংক নিয়ে সমস্যা আকছারই হচ্ছে। লিংক ফেলের জন্য ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছেন না অনেকে। অনেকের আবার অ্যাকাউন্টই নেই। প্রয়োজনে সমবায় ব্যাংকগুলিতে সকলের অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দিন।’ কেউ যাতে কোনওরকম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে একেবারে কড়া নজর তাঁর। সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকদেরও এনিয়ে বারবার সচেতন করতে শোনা গেল তাঁকে।
লোকসভা নির্বাচনে দলের খারাপ পারফরম্যান্স পুষিয়ে নিতে ফের নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভাকে সামনে রেখে ফের জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করে কাজের পর্যালোচনায় মন দিয়েছেন তিনি। সোমবার পূর্ব বর্ধমানের পর মঙ্গলবার হুগলির গুড়াপে জেলা প্রশাসনের আধিকারিক, পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা পর্বের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী একটি কথা স্পষ্ট করে দেন, মানুষ কাজ করাটাই এক ও একমাত্র লক্ষ্য প্রশাসনের।
যে স্তরের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি জনপরিষেবার কাজ হয়, সেই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের দিকে এদিন নজর দেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাগ করে দিলেন জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির কাজ। পশুপালনের জন্য খামার তৈরির কাজের ভার দিলেন পঞ্চায়েত সমিতিকে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে এই কাজটি করানো হবে। গোটা জেলায় দু হাজার থেকে আড়াই হাজার খামার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে জোর দিলেন স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি প্রকল্পের উপরেও। গোটা কাজটির দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হল জেলাশাসককে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা পরিষদের সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের নিয়ে বসে কাজের খুঁটিনাটি ঠিক করে ফেলুন।’
কৃষকবন্ধু অর্থাৎ চাষিদের সহায়তায় রাজ্য সরকারের যে প্রকল্প রয়েছে, তার সুবিধা চাষিরা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না, এদিনের বৈঠকে সেই খোঁজও নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি জেলার নিরাপত্তার বিষয়েও খোঁজখবর করেন তিনি। পথ নিরাপত্তায় আইন ভাঙায় যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তাঁকে জানান সংশ্লিষ্ট আধিকারিক। তাতে কিছুটা আশ্বস্ত হলেও, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে তিনি গোটা ব্যবস্থা ভালভাবে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।
এদিন প্রশাসনিক বৈঠক সেরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলে যান পাশের আদিবাসী গ্রামে। সেখানে বাসিন্দাদের সঙ্গে নিজেই জনসংযোগ করেন। তাঁদের কথাবার্তা শোনেন। মানুষের মাঝে নেমে তাঁদের উচ্ছ্বাস ভাগ করে নেন। কিছুক্ষণ সেখানে কাটিয়ে গাড়িতে উঠে চলে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এই একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে সোমবার, পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠক শেষে। মমতা চলে গিয়েছিলেন আলিশা গ্রামে। সেখানে এক আদিবাসী পরিবারের আতিথ্য গ্রহণ করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.