দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: উপযুক্ত জায়গার অভাবে মার খাচ্ছে মোয়া হাব তৈরির কাজ। বসছে না আধুনিক মেশিন। ফলে বাধার মুখে জয়নগরের মোয়া শিল্প। বিদেশে মোয়া পৌঁছে দিতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে মোয়া ব্যবসায়ীদের। কতদিনে তৈরি হবে এই মোয়া হাব, তা বুঝে উঠতে পারছেন না মোয়া ব্যবসায়ীরা।
২০১৭ সালে গঙ্গাসাগরে একটি সভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন জয়নগরের মোয়াকে বিদেশের মানচিত্রে জায়গা করে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হবে মোয়া হাব। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দপ্তর থেকে মোয়া শিল্পকে আধুনিক করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ২০১৮ সালে প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ করে মেশিন আনা হয় জয়নগরে। কিন্তু জায়গার অভাবে সেই মেশিন বসানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে জয়নগরের শ্রীপুরে রাজ্যের সংখ্যালঘু দপ্তরের তৈরি একটি বিল্ডিংয়ে ওই মেশিন বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে মেশিন বসানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে পাওয়া যায়নি কোনও সদুত্তর। আর তাই মেশিন বসেনি।
এ বিষয়ে মোয়া ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রঞ্জিত ঘোষ বলেন, “জায়গা নিয়ে সমস্যার কথা শুনে আমি সরকারিভাবে জায়গা দিতে এগিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু শুধু জায়গা থাকলে হবে না সেখানে ঘর তৈরি করে দিতে হবে।” মোয়া ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবি, মেশিনটি কাজ করতে শুরু করলে মোয়ার প্যাকেজিং এবং গুণমান সবটাই খুব ভালভাবে বজায় রাখা সম্ভব হতো। কিন্তু মেশিনটি পড়ে থাকার কারণে মোয়া চিরাচরিত পদ্ধতিতে তৈরি করতে হচ্ছে। ফলে ৭ থেকে ১০ দিনের বেশি মোয়া ভাল রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
কনকচূড় ধানের খই, নলেন গুড়, কাজু, পেস্তা ও ভাল মানের ঘি সহযোগে বানাতে হয় মোয়া। এই সমস্ত উপকরণ হাত দিয়ে পাকিয়ে তৈরি মোয়া খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। মেশিনের সাহায্যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা গেলে অনেক দিন এই খাদ্য বস্তুটি ভাল রাখা সম্ভব হবে। বিষয়টি দ্রুত করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন জয়নগর কেন্দ্রে সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। সংখ্যালঘু দপ্তরকে জানিয়েছিলেন, তাদের বিল্ডিংটা মোয়া শিল্পের কাজে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। লাল ফিতের ফাঁসে আটকে আছে মোয়া শিল্পের ভবিষ্যৎ।
এ বিষয়ে সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন,”সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তর থেকে ওই বিল্ডিংটা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে সমস্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও তারা বিষয়টি নিয়ে কোনওরকম উচ্চবাচ্য করেননি। তাই জয়নগরের মোয়া জি.আই পাওয়ার পরও বিদেশের বাজারে তেমন সাড়া ফেলতে পারছে না। এই মেশিনের সাহায্যে মোয়া তৈরি করতে পারলে প্রায় এক মাস তা ভাল রাখা সম্ভব হতো। যা শুধু ভারতে নয় বিদেশের বাজারে পৌঁছে দেওয়া যেত এবং মোয়া শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার মানুষ উপকৃত হতেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.