শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: মহামারীর কারণে গতবছর পুজোয় (Durga Puja 2021) কাঁটছাট হয়েছিল। বর্ণময় পুজোর পঞ্চাশ বর্ষপূর্তি উদযাপিত হয়েছে বড়ই বর্ণহীনভাবে। এবার একান্নতম বছরে পা দিল রায়গঞ্জের এই পুজো। তবে এবারও আড়ম্বরের ছিঁটেফোঁটা নেই। করোনার কাঁটায় রায়গঞ্জের বিখ্যাত ‘বিদ্রোহী’ ক্লাবের দুর্গাপুজো বড্ড ম্লান। তবে কোভিড বিধি মেনেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি।
বছর দুয়েক আগেও রায়গঞ্জের শহরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মণ্ডপ করত ‘বিদ্রোহী’ ক্লাব। দেবী প্রতিমার রূপে মুগ্ধ হয়ে যেতেন উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরবাসী। মালদহ থেকেও দর্শনার্থীরা ছুটে আসতেন সেখানে। কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি এই ক্লাবে নিয়মিত যেতেন। সেই গল্প এখন দুর্গাদালানের আনাচে কানাচে কান পাতলে ভেসে আসে। করোনায় শহরের অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ফলে এবারের পুজোও কার্যত আড়ম্বরহীন। তবে নিষ্ঠা, আচার-উপাচারে কোনও ত্রুটি রাখতে রাজি নন উদ্যোক্তারা।
অস্থায়ী মণ্ডপ ছেড়ে ১৯৮৯ সাল থেকে পাকাপাকিভাবে কংক্রিটের দুর্গামন্দিরে পুজো শুরু করেছে এই ক্লাব। বর্তমানে সেখানেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দুর্গামণ্ডপের পাশে কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পী প্রয়াত মন্টু পালের ছেলে কালু পাল প্রতিমা নির্মাণ করছেন। আগে দশমীর দিন দেবী প্রতিমা গোটা শহর পরিক্রমা করে অদূরের বন্দর শ্মশানে বিসর্জন করা হত। কিন্তু বর্তমানে রায়গঞ্জ দুর্গা দালানে দেবী প্রতিমা রেখে নিত্যপুজো করা হয়।
১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিদ্রোহীর দুর্গাপুজোর উদ্ধোধন করতেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি। সেইসময় ষষ্ঠীর সন্ধেয় পুজোমণ্ডপের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন উপলক্ষ্যে প্রখ্যাত শিল্পীরা আসতেন। কিন্তু প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি কয়েক বছর হল প্রয়াত হয়েছেন। সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পবিত্র চন্দের। করোনার কারণে কমেছে বাজেটও। এই অবস্থায় সুবর্ণ বর্ষ পালন সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন মোহিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “দুই বছর মানুষের আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ। ফলে মানুষ চাঁদা দেবেন কীভাবে। তাই কোনওরকমে পুজোর আয়োজন।” তবে যেহেতু বিদ্রোহীর দুর্গাপুজো, তাই সামান্যের মধ্যেও অসামান্য আয়োজনের আশায় রায়গঞ্জবাসীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.