ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনা। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ঠিক যেন ২০২০ সালের মার্চ মাস। গত বছর এই সময় মাত্র দু’জনের শরীরে করোনা ভাইরাস (Coronavirus) মিলেছিল। সেই সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ছ’মাসের মধ্যে কোথায় গিয়ে ঠেকেছিল, বিলক্ষণ জানেন চিকিৎসকরা। ২০২১-এর মার্চের শেষের পরিস্থিতি কী হবে? ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে কি ফের লকডাউন জারি হবে বঙ্গে? রাস্তাঘাটে, ট্রেনে, বাসে, অফিস কাছারিতে এই প্রশ্নই এখন মুখে মুখে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এমন কোনও কিছু নিয়েই সরকারি স্তরে আলোচনা হয়নি। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, সমস্ত হাসপাতালের আইসিইউ, আইটিইউ বেড ভরে গেলে লকডাউন (Lockdown) ছাড়া উপায় নেই। এই মুহূর্তে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যের ৪৫টি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা চলছে। শনিবার ২২ হাজার ৭৭৯ জনের কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। পজিটিভিটি রেট ৬.৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ জন টেস্ট করলে ৬ জনের দেহে মিলছে ভাইরাস।
এসএসকেএম হাসপাতালের কনসালট্যান্ট সার্জন ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, এই মূহূর্তে যে সমস্ত কোভিড রোগী মিলছে তাদের উপসর্গ মৃদু, অথবা মাঝারি। গুরুতর অসুস্থ না হওয়ায় বেশিরভাগই বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাচ্ছেন। যে কারণে হাসপাতালের বেড এখনও খালি। সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী ৪.৯২ শতাংশ কোভিড বেড ভরতি রয়েছে। ৯ হাজার ৬৮০ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের উচ্চপদস্থ এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এই মুহূর্তে কোভিড চিকিৎসার জন্য সাড়ে তিনশো বেড রয়েছে। তার মধ্যে অর্ধেক বেডই খালি। এমআর বাঙুর হাসপাতালের সুপার শিশির নস্করও জানিয়েছেন সেখানে করোনার ৭৩০ টি বেডের মধ্যে অর্ধেক বেড খালি। প্রশ্ন উঠছে, এমনটা কতদিন থাকবে?
এই বছর ১ মার্চও যে সংক্রমণ নেমে গিয়েছিল দুশোর নিচে সেটাই তো এখন চারশো ছুঁইছুঁই। এসএসকেএম হাসপাতালের কনসালট্যান্ট সার্জন দীপ্তেন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, সংক্রমণ ফের বাড়ছে। অবিলম্বে সকলকে টিকা নিতে হবে। প্রাথমিক স্তরে যখন লকডাউন করা হয়েছিল তখন ভাইরাস সম্বন্ধে সম্যক ধারণা ছিল না। কিন্তু এই মুহূর্তে সময়টা তেমন নয়। তবে একইসঙ্গে টিকা না নেওয়ার মানসিকতাকে নিন্দে করেছেন ডা. সরকার। তিনি জানিয়েছেন, টিকা নেবেন কি নেবেন না, তা জানতে ইন্টারনেট ঘাঁটছেন মানুষ। এই প্রবণতা মারাত্মক। ইন্টারনেট কখনও ডাক্তার হতে পারে না। সমস্ত বিশেষজ্ঞরা যেখানে বলছেন টিকা নেওয়া আবশ্যিক সেখানে এমন মানসিকতা অত্যন্ত খারাপ। টিকা নিলে করোনা হয়তো হবে কিন্তু রোগের প্রাবল্য অনেকটাই কম থাকবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.