সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: এতদিন শহরের মানুষ জানত ওরা ‘আড্ডাবাজ’। রাতদিন কাজ বলতে শুধু আড্ডা আর আড্ডা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরাই এখন মানুষের চোখে হয়ে উঠেছে ভগবান। কারণ চরম দুর্ভোগের দিনে সকলেই যখন ঘরবন্দি, ওঁরাই তখন ত্রাতার ভূমিকায়।
লকডাউনের কারণে দোকানপাট সব বন্ধ। ফলে ফেলে দেওয়া অবশিষ্ট খাবারেরও আজ বড় অভাব। তাই ভবঘুরের দল পড়েছে মহা ফাঁপড়ে। নিজেদের জীবন বাজি রেখে এখন আড্ডাবাজ যুবকেরাই পাশে দাঁড়াচ্ছে তাঁদের। লকডাউন ঘোষণার পর শনিবার ছিল চতুর্থ দিন। আর এই চার-চারটি দিনই ডায়মন্ডহারবার পুরএলাকায় এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানো মানুষের দিন ও রাতের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে চায়ের দোকানের সামনে ‘আড্ডা মারা’ ওই যুবকরা। প্রতিদিনই তাঁদের কেউ না কেউ বাড়ি থেকে রেঁধে নিয়ে এসেছে খিঁচুড়ি আর তরকারি। আর সেটাই পাত পেড়ে খাইয়েছে ভবঘুরেদের।
এছাড়াও লকডাউনের কারণে পরিবহণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় অনেকেই আটকে পড়েছেন ডায়মন্ড হারবারে। তাঁদেরও প্রশাসনের সহযোগিতায় গাড়ির ব্যবস্থা করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে ওই আড্ডাবাজগুলোই। কী বলবেন এখন তাঁরা, যাঁদের কাছে এই সেদিনও কেবল ‘আড্ডাবাজ’ হিসেবেই পরিচিত ছিল অমিত, রেজা, সাবিররা? কি বলবেন এখন তাঁরা, যাঁরা এতদিন ওদের আঙ্গুল দেখিয়ে বলাবলি করতেন, ‘কোনও কাজ নেই কী আর করবে, তাই আড্ডা মারছে।’ মানবতা যে এখনও বেঁচে আছে ফের তা প্রমাণ করে দিল আড্ডাবাজের দলই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.